জাতীয়

অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার রায় ঘোষণা কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৫ সালে একুশে বইমেলায় যোগ দিতে বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসছেন- এমন খবরে তৎপর হয়ে ওঠে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা।

দেশে আসার পর মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎকে অনুসরণ করতে থাকে তারা। সুযোগ পেয়ে ২৬শে ফেব্রুয়ারি বইমেলার কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। প্রায় ৬ বছর পর কাল দেয়া হচ্ছে এই হত্যা মামলার রায়।

ছয় বছর আগে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জঙ্গি হামলায় নিহত হন বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়। চাপাতির আঘাতে আঙুল হারান তার স্ত্রী।

বই মেলায় যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্ত্রীসহ দেশে আসছেন অভিজিৎ- এই খবর নিশ্চিত হয়ে দুহাজার পনেরোর জানুয়ারিতে এলিফ্যান্ট রোডে ভাড়া বাসায় ওঠে আনসার আল ইসলামের জঙ্গিরা।

সতেরোই ফেব্রুয়ারি দেশে পৌঁছান মুক্তমনা ব্লগ সাইটের প্রতিষ্ঠাতা। সে-খবর পেয়ে জরুরি সভায় বসে জঙ্গিরা। টার্গেট অভিজিতের বিষয়ে ব্রিফ করে জঙ্গিগোষ্ঠীটির সামরিক কমান্ডার চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া। টানা অনুসরণের পর পঁচিশে ফেব্রুয়ারি অভিজিতকে হত্যা করতে বইমেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় জঙ্গিরা। কিন্তু সেদিন তিনি বই মেলায় না আসায় ভেস্তে যায় পরিকল্পনা।

পরদিন ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি বিকেলে সস্ত্রীক বই মেলায় আসেন অভিজিৎ। সুযোগের অপেক্ষায় অনুসরণ করতে থাকে জঙ্গিরা। রাত সাড়ে আটটার দিকে অভিজিৎ বই মেলা থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই চাপাতি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে জঙ্গিরা। দূরে দাঁড়িয়ে হত্যাকাণ্ড তদারকি করে জিয়া।

এই হত্যাকাণ্ডে বারো জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলেও, পাঁচজনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানার অভাবে এবং আরেকজন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাদের বাদ দিয়ে আসামি করা হয় ছয় জনকে। উগ্রপন্থী ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী বাদে বাকি পাঁচ আসামিই আনসার আল ইসলামের সদস্য। পলাতক রয়েছে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া ও আকরাম।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির জানান, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছি এবং মাননীয় আদালতে যুক্তি-তর্কে উপস্থাপন করেছি, বোঝাতে চেষ্টা করেছি এবং আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যু দণ্ড আশা করছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম জানান, এখন বিজ্ঞ আদালত যদি শাস্তি দেয় দিতে পারে আদালতের শাস্তি দেয়ার একটা রাইট আছে। কিন্তু আমার দৃস্টিতে মামলাটা একা 'পল শেডো অব ডাউট; মানে সন্দেহাতিতভাবে প্রমানিত হয়নাই।

ছেলের পর স্ত্রীকে হারানোর বেদনা নিয়েও অসুস্থ শরীরে আদালতে সাক্ষ্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অজয় রায়। বিচার শেষ হওয়ার আগেই দুহাজার ঊনিশের নয়ই ডিসেম্বর চিরবিদায় নেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। এখন কেবল অজয় রায়ের ছোট ছেলে বেঁচে আছেন।

ভাই হত্যার রায়ের দিন ঠিক হওয়ায় তিনি জানান, বিচার দেখে যেতে পারলে বাবা-মা অন্তত স্বান্তনা পেতেন।

নিহত লেখক অভিজিৎ রায়ের ভাই অনুজিৎ রায় বলেন, হয়তো বাবার আক্সেপ থাকতো বিচার করলেওতো যে চলে গেছে সেতো আর ফেরত আসবে না। কিন্তু তার পরেও অন্ততো উনি বলতে পারতেন 'না এ দেশে এখনও সুষ্ঠ বিচার হয়' এটা হয়তো তিনি দেখে যেতে পারতেন।

লেখালেখির কারণে অভিজিতকে খুন করেই থামেনি জঙ্গিরা। এরপর এই লেখকের বই ছাপানোয় জাগৃতির প্রকাশক দীপনকে হত্যা করা হয়। আরেক প্রকাশক শুদ্ধস্বরের টুটুল আক্রান্ত হলেও প্রাণে বেঁচে যান।

সান নিউজ/এসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সমাজে এখনও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল এ...

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসে...

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অ...

সাভারের সড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি: সাভারে ঈদের ছুটি ও বেতনের দাবিতে হেমায়েতপুর-...

ঈদে যৌথবাহিনীর টহল বৃদ্ধিসহ ১১ নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সেনাবাহিনী, বিজি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা