নিজস্ব প্রতিবেদক:
এবার মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে অপসারণ করেছে সরকার। রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণবিধি ভঙ্গ এবং অসদাচরণের দায়ে মোহাম্ম আলীকে অপসারণ করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। এ নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে দুই জন প্রসিকিউটরকে অপসারণ করা হল। এর আগে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে অপসারণ করা হয় আইনজীবী তুরিন আফরোজকে।
প্রসিকিউটর হিসেবে মোহাম্মদ আলীকে নিয়োগ দেয়া হয় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর।
শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণবিধি ভঙ্গ এবং অসদাচরণের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৬ সালে তাকে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছিল। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তখন যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক নোটিসে জানিয়েছিল, প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে ট্রাইব্যুনালের অন্যান্য মামলার তদন্ত কার্যক্রম থেকে জনস্বার্থে প্রত্যাহার করা হল।
মোহাম্মদ আলী একটি মামলায় এক আসামির জামিনের জন্য কাজ করছেন, এমন অভিযোগও তখন উঠে আসে গণমাধ্যমে।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আরেক প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেন,‘তাকে অপসারণের জন্য চিফ প্রসিকিউটর বেশ আগেই মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল এবং পেশাগত অভিযোগটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চিফ প্রসিকিউটর তার ক্ষমতাবলে মোহাম্মদ আলীকে প্রসিকিউশনের সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রেখেছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বেতন-ভাতা গ্রহণ করে যাচ্ছিল’। মালুম বলেন, ‘বহু আগেই তাকে অপসারণ করা উচিৎ ছিল। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাকে অপসারণের প্রজ্ঞাপনটা আজ জারি করল’।
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপন বৈঠক এবং টাকা লেনদেনের অভিযোগের ঘটনায় প্রসিকিউটর পদ থেকে তুরিন আফরোজকে অপসারণ করা হয় গত বছরের ১১ নভেম্বর। যদিও তুরিন আফরোজ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি তাঁর কোন ধরণের বক্তব্য নেয়নি বলেও অভিযোগ তুরিনের। তাঁর দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে সামগ্রিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই সরকারের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা একটি বিশেষ চক্র তাঁকে অপসারণের পেছনে কাজ করেছে।