মাহমুদুল আলম: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় বিএনপির সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ূন কবির এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর থেকে আইনাঙ্গণ ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা-সমালোচনায় আছেন হাবিব। এসব আলোচনায় উঠে আসছে তার বিরুদ্ধে হওয়া অন্যান্য মামলা এবং তার সহায়-সম্পদসহ নানা বিষয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেয়া তার হলফনামা থেকে এসব বিষয় তুলে ধরা হলো।
'মো. হাবিবুল ইসলাম হাবিব' জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০৫, সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থিতার জন্য হলফনামা জমা দেন। এতে তার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা আছে এমএসসি (পদার্থ বিজ্ঞান)। হলফনামায় স্বাক্ষরকালে তার বিরুদ্ধে ১৬টি ফৌজদারি মামলা ছিল। তাছাড়া অতীতেও তার বিরুদ্ধে দুইটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। হলফনামায় তার পেশার বিবরণীতে লেখা আছে 'ঠিকাদারি ব্যবসা'।
প্রার্থীর নিজের এবং তার স্ত্রীর বাৎসরিক আয়ের উৎস হিসেবে কৃষিখাত হতে আয় দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ৪৫ হাজার এবং ৫০ হাজার টাকা। বাড়ি বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ আয় নিজের ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৭ টাকা। ব্যবসা থেকে নিজের আয় চার লাখ ৫২ হাজার ৫২০ টাকা। শেয়ার, ব্যাংক আমানত থেকে নিজের আয়ের ঘর ফাঁকা, আর স্ত্রীর ৮২ হাজার ৬৭৩ টাকা। পেশা (শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক ইত্যাদি) থেকে নিজের আয়ের ঘর ফাঁকা, আর স্ত্রীর সোয়া চার লাখ টাকা। 'অন্যান্য' থেকে প্রার্থীর আয় সাড়ে ৩৭ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তি বিষয়ে তার নিজের এবং স্ত্রীর নগদ টাকা উল্লেখ করা আছে যথাক্রমে ১৫ লাখ ৭১ হাজার ৮০৩ এবং ৩৭ লাখ ৩০ হাজার ৮৮৯ টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা বিষয়ে সব ঘর ফাঁকা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২০ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৭ টাকা। নিজ নামের ঘর ফাঁকা, তবে স্ত্রীর নামে ১৫ লাখ টাকার এফডিআর আছে। নিজ নামে থাকা ট্যাংকলরীর মূল্য উল্লেখ করা আছে ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর স্ত্রীর নামে থাকা প্রাইভেট কারের মূল্য উল্লেখ করা আছে আট লাখ টাকা। স্বামী ও স্ত্রীর নামে ১০ ভরি করে স্বর্ণ আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি, যার অর্জনকালীন মূল্য উভয়ের ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে ৫০ হাজার টাকা করে। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী আছে যথাক্রমে ৫০ হাজার ও এক লাখ টাকার। আসবাবপত্র আছে যথাক্রমে ৫০ হাজার এবং দুই লাখ ৩০ হাজার টাকার।
আর স্থাবর সম্পদের হিসেবে নিজের এবং স্ত্রী নামে থাকা কৃষি জমির অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ করা আছে যথাক্রমে ১০ লাখ সাত হাজার এবং দুই লাখ টাকার। নিজ নামে থাকা অকৃষি জমির অর্জনকালীন মূল্য ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। নিজ নামে থাকা দালানের অর্জনকালীন মূল্য ১০ লাখ টাকা। ঢাকার বনানীতে নিজ নামে থাকা ফ্ল্যাটের অর্জনকালীন মূল্য তিন কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার এবং স্ত্রীর নামে ধানমন্ডিতে থাকা ফ্ল্যাটের অর্জনকালীন মূল্য ৪৪ লাখ দুই হাজার টাকা। চা বাগান, রাবার বাগান, মৎস্য খামার বিষয়ে সব ঘর ফাঁকা আছে। ইসলামী ব্যাংকে এক কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩২৭ টাকা দায় আছে বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর এই হলফনামায় স্বাক্ষর করেন তিনি। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী বি. এম. মিজানুর রহমান পিন্টু শনাক্ত করে দিলে একই তারিখে আইনজীবী (নোটারি পাবলিক) এতে স্বাক্ষর করেন।
সান নিউজ/এমএ/এসএস