নিজস্ব প্রতিবেদক : শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ৩টি মেডিকেল রিপোর্ট ও ছাড়পত্রে গরমিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপারসহ (এসপি) ১১ জনকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার (৩১ জানুয়ারি) স্বাক্ষরের পর ১২ পৃষ্ঠার এই আদেশ প্রকাশ করা হয়। গণমাধ্যমকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুর্টি এ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন- ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আরিফুল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান, ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. একরামুল রেজা, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য ডা. ফাহমিদা আক্তার, ডা. তোফায়েল হক, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন এবং নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মো. শাহরিয়ার, ডা. তাসনিম তামান্না, ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।
হাইকোর্ট আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। আদেশে ওই ঘটনায় দুটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় ৩ ধরণের প্রতিবেদন পাওয়ায় অসন্তোষ জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আসামির জামিনের শুনানি নিয়ে ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ওই দিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট মো. শাহপরান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১১ বছর বয়সী আরেক শিশুর বিরুদ্ধে করা মামলায় ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষায় একাধিক চিকিৎসকের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন দেয়া এবং তদন্তে গাফিলতির জন্য সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও এসপিসহ ৩ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই দিন এ বিষয়ে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে চিকিৎসকদের বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশদের জন্য মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) তিন সদস্য বিশিষ্ট পৃথক কমিটি গঠন করে তদন্ত শেষে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত এবং আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে কোনও রকম হয়রানি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
সান নিউজ/এমএ/