নিজস্ব প্রতিবেদক : ৬৯ হাজার ৯০৪ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান কার্যক্রম আজ শনিবার (২৩ জানুয়ারি) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে এসব ঘর বিতরণ করা হবে।
‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘোষণা বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এ গৃহপ্রদান কর্মসূচি উদ্বোধন হবে।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া বাড়িতে থাকছে দুটি কক্ষ। এছাড়া প্রতিটি বাড়ির সামনে একটি বারান্দা, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর ও খোলা জায়গা রয়েছে। পুরো ঘর নির্মাণে ব্যয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র পরিবহণে দেয়া হবে ৪ হাজার টাকা। ঘর রেজিস্ট্রি করা হবে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে। দলিলে দুজনেরই নাম ও ছবি থাকছে।
প্রথম দিন শনিবার ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে গৃহের চাবি দেয়া হবে। একই সঙ্গে ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনকে গৃহ ও ভূমিহীনকে ভূমি দেয়ার যে ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন তা পৃথিবীতে বিরল।
সরকারিভাবে একসঙ্গে কোনও দেশই এত মানুষকে গৃহ নির্মাণ করে দেয়নি। এজন্য ৬ মাস আগে আলাদা প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। এছাড়াও আগামী এক মাসের মধ্যে আরও ১ লাখ পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস গণমাধ্যমকে বলেন, এটি মুজিববর্ষের একটি অসাধারণ ঘটনা। গুগল আপনাদের সবার পকেটেই আছে, দেখতে পারেন; পৃথিবীতে এ নজির নেই। পৃথিবীতে এ রকম ঘটনার নজির আছে কিনা জানা নেই, একজন রাষ্ট্রনায়ক বলছেন, আমার দেশের গৃহহীন ও ভূমিহীন সব মানুষকে গৃহ ও ভূমি দেব।
তিনি বলেন, অব্যবহৃত ২ হাজার ৫৮ একর খাসজমি বিভিন্নভাবে জনকল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে বেশকিছু অবৈধ দখলদার ছিল, তাদেরও উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখানে দুটো উপকার হয়েছে। দখলদারমুক্ত হয়েছে এবং জনকল্যাণে সরকারি ভূমি ব্যবহার হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের চিন্তা থেকেই এই ঘরের নকশার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিটি ঘরে দুটি শয়ন কক্ষ, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর ও লম্বা বারান্দা থাকবে। সেটি অনুসরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাড়িগুলোতে আমরা বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থাও করেছি।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২৩ জানুয়ারি সারা দুনিয়াতে এটি প্রথম ঘটনা এবং একমাত্র ঘটনা, একসঙ্গে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমির মালিকানা দিয়ে বিনা মূল্যে দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী প্রদান করবেন।
একই সঙ্গে ব্যারাকের মাধ্যমে ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে। এছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে আরো এক লাখ ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এসএ