নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারি কালে পাওনা পরিশোধ না করে অন্যায়ভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকুরীচ্যুত ও ছাটাই করছে জুলফার বাংলাদেশ লিমিটেড। দীর্ঘ এক বছর ধরে তাদের ঘোরাচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) পুরানা পল্টনের পল্টন টাওয়ারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন চাকুরীচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এ এইচএস ইউসুফ হায়দার পলাশ, সাবেক জোনাল ম্যানেজার, খুলনা, জুলফার বাংলাদেশ লিমিটিডে। উপস্থিত ছিলেন মো. রাশেদুজ্জামান, সাবেক এরিয়া ম্যানেজার, ময়মনসিংহ, জুলফার বাংলাদেশ লিমিটেড।
তারা বলেন, সংবাদ সম্মেলন করার কথা জেনে জুলফার বাংলাদেশের কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার রাতে ফোন করে হুমকি-ধামকি দেয়। কোম্পানীর অনিয়মের কথা বাইরে কাউকে বলতে নিষেধ করে। এরপরও কেউ কিছু বললে তাদেরকে পরিবারসহ মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। তাদের ভয়ে চাকুরীচ্যুত অনেকে এই সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারেননি। প্রাপ্য বকেয়া পেতে কোম্পানীর চাকুরীচ্যুত ও ছাটাইকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
চাকুরীচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে অনৈতিকভাবে কর্মচারীদেরকে বাধ্যতামূলক চাকুরীচ্যুত করতে শুরু করে জুলফার বাংলাদেশ। যাহা আজ অবধি অব্যাহত আছে, যাহা বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এদিকে গত বছরের ১৩ জুলাই জুলফার বাংলাদেশের শেয়ার রেডিয়েন্ট গ্রুপের কাছে বিক্রি করে।
কিন্তু আমাদেরকে কোনো লিখিত চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়নি। শুধু মৌখিকভাবে বলা হয়েছিল, জুলফার বাংলাদেশ লিমিটেডের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ রেডিয়েন্ট গ্রুপে হস্তান্তর করা হয়েছে। পওে রেডিয়েন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান জুম মিটিংয়ে জুলফার বাংলাদেশের সকল কর্মকর্তাদেও সঙ্গে এক বৈঠকে এই মর্মে সবাইকে আশ^স্থ করেন যে, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকুরী থেকে বাদ দেওয়া হবে না।
কিন্ত বর্তমানে রেডিয়েন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যানের নির্দেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতাদিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পরিশোধ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়া অন্যান্য বহুজাতিক ঔষধ কোম্পানী যেভাবে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান করেছে একইভাবে আমাদেরকেও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তারা বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জুলফার বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষে চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক নোটিশের মাধ্যমে জানান, জুলফার বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও ইউনাইটেড আরব আমিরাতের জুলফারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টেলিকনফারেন্সে কথা বলেছেন। এসময় জুলফারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতাদি পরিশোধের জন্য অর্থ চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া গেছে যা আগামী দশ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়, কোম্পানী বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করলে অথবা মালিকানা হস্তান্তর করা হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, বেতনসহ অর্জিত ছুটি ও দেশী-বিদেশী আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। যা ঐ নোটিশ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। বরং অন্যায়ভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাটাই ও বিনা কারণে চাকুরীচ্যুত করে যাচ্ছে জুলফার বাংলাদেশ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মির্জা মুশফিকুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
সান নিউজ/টিএস/এম