নিজস্ব প্রতিবেদক : মশার উৎপাতে অতিষ্ট নগরবাসী। কিন্তু মশা নিধনের কার্যকর ওষুধ পাওয়া নিয়ে জটিল সমস্যা পড়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। একাধিকবার দরপত্র আহ্বান করেও আশানুরূপ কার্যকর ওষুধ পাচ্ছে না সংস্থা দুটি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) অনেকটা তড়িঘড়ি করে যুক্তরাজ্য থেকে আনা নোভালিউরন নামে মশা নিধনের একটি ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, শীত মৌসুমে সাধারণত কিউলেক্স মশা বেশি কামড়ায়।
এ মশা যন্ত্রণা দিলেও রোগ ছড়ানোর শঙ্কা থাকে না। কিন্তু কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ঢিমেতালে কার্যক্রম চলমান থাকায় রাজধানীজুড়ে এর উৎপাত দিন দিন বেড়েই চলছে। মশা নিধন কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘মশা নিধনে ডিএনসিসি কয়েকটি ধাপে কাজ করে যাচ্ছে।
কার্যকর মশার ওষুধ ছিটানোসহ মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করার কাজটি আমরা করে যাচ্ছি নিয়মিত। সম্প্রতি খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের কাছে আসার পর আমরা খাল পরিষ্কারেও নেমেছি। খালগুলো পরিষ্কারের পর স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করে সচেতনতা বাড়ানোর কাজটিও করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘শীতকালে মূলত কিউলেক্স মশা বেশি থাকে। এসব মশা অস্বস্তি বা যন্ত্রণা দিলেও রোগ ছড়াতে পারে না। বর্তমানে ডিএনসিসি যুক্তরাজ্য থেকে আনা মশার ওষুধ নোভালিউরনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করছে। আশা করছি নগরবাসীর সহযোগিতা পেলে মশক নিধনে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
৯-১০ মাসে একাধিকবার দরপত্র আহ্বান করেও ভালো মানের ওষুধ না পাওয়ায় তা চূড়ান্ত করতে পারেনি সংস্থাটির কর্র্তৃপক্ষ। এভাবে কেটে যায় বেশকিছু সময়। এর আগে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের পর বিদেশ থেকে সরাসরি ওষুধ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয় দুই করপোরেশনকে। এরপর বিদেশ থেকে ম্যালাথিউন ৫ শতাংশ আমদানি করে ডিএসসিসি।
আমদানি করা এ ওষুধটি সরাসরি ব্যবহার উপযোগী না হওয়ায় এর সঙ্গে ৯৫ শতাংশ ডিজেল ও ২৫ থেকে ৫০ এমএল সাইট্রোনেলা মিশিয়ে ছিটাতে হয়। ডিজেল এবং ওষুধের ফর্মুলেশন (মিশ্রণ) সঠিক হতে হয়। কিন্তু এ কাজ করার জন্য সিটি করপোরেশনের নিজস্ব কোনও প্রযুক্তি নেই। তারা অন্য একটি সংস্থার সহযোগিতায় তা ব্যবহার করেছে।
ডিএসসিসির ভান্ডার বিভাগ জানায়, মশা মারার ওষুধ ফর্মুলেশন করতে গত বছরের ১ জানুয়ারি ৬ লাখ ৪০ হাজার লিটার এ্যাডাল্টিসাইডিং ওষুধের জন্য দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। সেখানে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২ কোটি ৪১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
কিন্তু তিন দফা দরপত্রে এ প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত করতে পারেনি তারা। পরে চতুর্থ দফায় এর পরের দরপত্রে চূড়ান্ত করে ডিএসসিসি। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় এসিআই ফর্মুলেশন কোম্পানি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি লিটার ওষুধ ১২৯ টাকা দাম দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। সেই ওষুধ সরবরাহ করার জন্য কার্যাদেশ পাওয়ার পর ১ লাখ লিটার ওষুধ সরবরাহ করে এসিআই কোম্পনি।
কিন্তু আবারও মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি মশা নিধনের ওষুধ। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত থাকা কর্মীর সংখ্যা কমানোর পর দৈনন্দিন কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়েছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। মাস দুয়েক আগে ডিএসসিসির বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ার্ডে নিয়োজিত নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী রেখে বাকিদের সচিব দফতরে সংযুক্ত করা হয়।
সান নিউজ/এসএ