নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারকে নতুন একটি প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের আস্থা ফেরানোর জন্য গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তাব দেয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) চীনের আয়োজনে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এ প্রস্তাব দেয়া হবে। দুপুর ২টায় সচিব পর্যায়ের এই বৈঠক শুরু হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
অন্য দিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লু জাওহুই এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উ চান আয়ে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, রোহিঙ্গাদের আস্থা ফেরানোর জন্য গ্রাম ভিত্তিক এ্যাপ্রোচ যদি আমরা নিই, সেটা বোধ হয় মোর প্র্যাকটিক্যাল হবে।
তিনি বলেন, পার্টিকুলার এরিয়া থেকে যারা ভেরিফাইড হল, তাদেরকে যদি ফেরা নিশ্চিত করি, এটাকে যদি আমরা পাইলট হিসাবে গণ্য করি, এভাবে যদি ইউনিট বাই ইউনিট আগাই, তাহলে মোর প্র্যাকটিক্যাল হবে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে নিয়ে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয় দুই দেশেরই বন্ধুরাষ্ট্র চীন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ; যার মধ্যে মাত্র ৪২ হাজার জনকে ভেরিফিকেশন করার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, ভেরিফিকেশনের পর আমাদেরকে যদি জানায়, এই লোকগুলো নিচ্ছি, সেটার উপর ভিত্তি করে এ্যাকচুয়াল মুভমেন্টটা হবে। আস্থা ফেরাতে জাতিসংঘের পাশাপাশি মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সহযোগী রাষ্ট্রগুলোকে রাখাইনের বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করার কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ।
তিনি বলেন, সেখানে যদি শুধু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ থাকে, তার থেকে আমরা মনে করি, সেখানে যদি অন্যরা থাকে, ইউএন বা তার এজেন্সিজ, গ্রাউন্ডে যারা আছেন… চাইনিজরা যেহেতু পুরো জিনিসটাই গ্যারান্টার বা ব্রোকার হিসাবে দেখা দিচ্ছে, সুতরাং চাইনিজদেরও একটা ইনভল্ভমেন্ট আমরা আশা করব।
তিনি আরও বলেন, আসিয়ানের উইং যেটা আছে, তারা যদি ইনভলভড হয়, তারা যদি থাকে খুব ভালো হয়। এছাড়া ভারত-জাপান, কোরিয়া, তারাও যদি থাকে… তাদের প্রেজেন্স ইন সাম ফর্ম, তাহলে এই রোহিঙ্গারা কনফিডেন্স পাবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটা বাস্তবায়ন করা যাবে।
সান নিউজ/এসএ