সান নিউজ ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে পিছিয়ে গেল জনশুমারির কার্যক্রম। ২৩ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে জনশুমারি ও গৃহগণনার পরিকল্পনা ছিল। তবে এটি ৯ মাসের মতো পিছিয়ে অক্টোবরে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ফলে আগামী ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে। এই এক সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশের মানুষকে গণনার আওতায় আনা হবে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান। জনশুমারির প্রথম পর্যায়ের মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত, দেশে ১০ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় আদমশুমারি ও গৃহগণনা। সর্বশেষ ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে আদমশুমারি পরিচালিত হয়। সেই হিসাবে চলতি বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে নতুন শুমারির (ষষ্ঠ) পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী ‘আদমশুমারি ও গৃহগণনা’র নাম পরিবর্তন করে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’ করা হয়। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী জনশুমারি বা মানুষ ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হবে ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ঘোষণা করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনাজনিত কারণে আমরা ১০ মাস পিছিয়ে গেছি। ইতোমধ্যে আমরা সরকারপ্রধানের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি পেছানোর জন্য।
বিবিএসের তথ্যমতে, বিবিএসের পরিচালিত বৃহত্তম পরিসংখ্যানিক কর্মকাণ্ড হলো ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১-এর মাধ্যমে দেশের খানার সংখ্যা, খানায় বসবাসকারী সদস্যদের সংখ্যা, আর্থ-সামাজিক ও জনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করা হবে। এসব তথ্য দেশের সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এবারের শুমারিতে আইসিআর প্রশ্নপত্রের পাশাপাশি মাল্টি মোড (ট্যাব, পিক অ্যান্ড ড্রপ, টেলিফোন ইন্টারভিউ) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া এবারই প্রথম বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের (প্রবাসী) এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জনশুমারি ও গৃহগণনা চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হলো পর্যায়-১, এর আওতায় শুমারির ব্লক এলাকা প্রণয়ন, জিআইএস পদ্ধতি ব্যবহার করে দেশের সব এলাকা ম্যাপ ও জিও কোডের আওতায় স্বতন্ত্র শনাক্তকরণ মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে। পর্যায় ২-এর আওতায় শুমারি পরিচালনা, দেশের সব খানা, ব্যক্তি এবং আবাসন ইউনিট গণনা করা হবে। পর্যায়-৩-এর আওতায় শুমারি পরবর্তী জরিপ পরিচালনা শুমারির গুণগত মান পরিমাপ করা হবে এবং পর্যায়-৪-এর আওতায় আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপ পরিচালনা খানা ও জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
সারা দেশের ১৪৪ জন জোনাল কর্মকর্তা জোনাল অপারেশন প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন। জোনাল অপারেশন প্রথম পর্যায়ের মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
সান নিউজ/আরআই