সান নিউজ:
আগে থেকে অন্য কোনো রোগ ছিল না, তবে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী এমন মানুষের মৃত্যুহার ১ শতাংশের নিচে (০.৯%)। আর সর্বোচ্চ মৃত্যু হচ্ছে ৮০ বছরের উর্ধ্বে যাদের বয়স এবং তাদের মধ্যে যারা আগে থেকেই ভুগছেন বিভিন্ন জটিল রোগে। আবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরনো হৃদরোগী ছিলেন সবচেয়ে বেশি। চাইনিজ কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ এইচ ও) সমন্বিত গবেষণা এ তথ্য বলছে।
গবেষণাটির তথ্য অনুসারে, চীনে কভিড-১৯ এ নিশ্চিত আক্রান্ত, সন্দেহজনক আক্রান্ত ও উপসর্গধারী-এই তিন ধরনের রোগীদের মৃত্যু পর্যালোচনা করে দেখানো হয়েছে মাত্র ০.৯ শতাংশ মারা গেছেন যাদের আগে কোনোধরনের রোগযুক্ত (কমোরবিডিটিস) ছিল না। মৃত বাকিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হার ছিল-হৃদরোগ ১৩.২ শতাংশ, ডায়াবেটিস ৯.২%, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ৮% ক্যান্সার ৭.৬% উচ্চ রক্তচাপ ৮.৪%।
গবেষণাটি বলছে, ল্যাবরেটরি টেস্ট নিশ্চিত হওয়া করোনাভাইরাসে মৃতদের মধ্যে ৮০ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষ ছিলেন ২১ দশমিক ৯ শতাংশ আর করোনাভাইরাস জনিত সব ধরনের মৃত্যুর মধ্যে (নিশ্চিত আক্রান্ত, সন্দেহজনক আক্রান্ত ও উপসর্গধারী) ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষের বয়স ছিল ৮০ বছরের উপরে, ৮শতাংশের বয়স ৭০ -৭৯ বছর, ৩ দশমিক ৬ শতাংশের বয়স ৬০-৬৯ , এক দশমিক ৩ শতাংশের বয়স ছিল ৫০-৫৯ বছর। ৪০-৪৯ বছরের মানুষ ছিলেন দশমিক ৪ শতাংশ, আর ৩০-৩৯, ২০-২৯ ও ১০-১৯ বছরের মানুষ ছিলেন দশমিক ২% করে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ পর্যন্ত ১০ বছরের নিচে কারো মৃত্যু হয়নি। তবে সবশেষ গতকাল রবিবার যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরের কম বয়সী এক শিশুর করোনাভাইরাসে মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এমন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বয়স্ক জনগোষ্ঠী এবং আগে থেকে জটিল রোগে আক্রান্তদের প্রতি সর্বোচ্চ সতর্কতায় জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে। আর এ কারণে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বেশি সতর্ক করছেন বয়স্ক ও অন্যান্য রোগে ভুগতে থাকা মানুষদের প্রতি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক বলেন, করোনা ভাইরাসের ধরণ অনুসারে এখন পর্যন্ত বয়স্ক জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। তাই এ ধরণের মানুষের দিকে নজর রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আইইডিসিআর এর পরিচালক ড. মীরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা জানান, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যাদের করোনা ভাইরাসজনিত মৃত্যু হয়েছে, তাদের সবার যেমন বয়স ৭০ বছরের উপরে বা কাছাকাছি আবার তাদের প্রত্যেকেই আগে থেকে বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগে ভুগছিলেন।
তিনি বলেন, যদিও যে ১৫ জন এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন তাদের কয়েকজনেরও আগে থেকে অন্য রোগের জটিলতা ছিল।