নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাকালীন মহামারির আঘাত লেগেছে দেশের রফতানি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে, বেড়েছে দারিদ্র্য। তাই ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ১.৬ শতাংশ। ২০২২ অর্থবছরে কিছুটা বেড়ে হবে ৩.৪ শতাংশ। সর্বশেষ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সত্যিকারে করোনা মহামারিতে কতটা ক্ষকিগ্রস্থ হয়েছে তা বলা কঠিন কারণ দেশগুলোতে করোনা পরীক্ষার পরিমাণ সীমিত। সংস্থা জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২.০ শতাংশ।
আরও বলা হয়, ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৩ শতাংশ। এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ ভারতে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৯.৬ শতাংশ সংকুচিত হবে। যদিও ২০২১ সালে দেশের প্রবৃদ্ধি আসবে ৫.৪ শতাংশ। তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে উজ্জ্বল অবস্থানে রয়েছে চীন। এ বছর চীনের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৮ শতাংশ, ২০২০ সালে প্রবৃদ্ধি হয় ২ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৮.২ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস এ থেকে অনেক দূরে। বৈশ্বিক এই সংস্থার মতে, করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন কমেছে তেমনি রফতানিও সংকুচিত হয়েছে দুই অঙ্কের।
যদিও প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠানোয় ২০২০ সালে রেমিট্যান্সে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি আসে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হয়। তবে বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং খাত যেহেতু বহির্বিশ্বের ভালোমন্দের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, বিশেষ করে পোশাক রফতানির জন্য ব্যাপকভাবে ইউরোপ ও আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল।
কিন্তু করোনা মহামারিতে বর্তমানে দেশগুলোতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ভোক্তা চাহিদা কমেছে। ফলে রফতানি ব্যহত হয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতিতে পড়বে বাংলাদেশ। এ ছাড়া প্রবাসী আয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জ্বালানি তেলের দাম কমায় উপসাগরীয় দেশগুলোতে রাজস্ব সংকট থাকায়। এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সংযত বা মাঝারি ধরনের হবে বলে জানায় বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ৪.৩ শতাংশ সংকুচিত হওয়ার পর ২০২১ সালে ৪.০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসতে পারে। যদিও উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গত বছর ভালো করলেও এ বছর পরিস্থিতি খারাপ হবে। বলা হয়, সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
অথবা টিকার প্রয়োগ দেরি হওয়ার কারণেও এমনটি ঘটতে পারে। এতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ আরও বেড়ে যাবে। অর্থনীতিতে নতুন সংকট মোকাবেলায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সংস্থা জানায়, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারকরা যদি সমন্বিতভাবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নেয় তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার যথাযথভাবে হবে না। তাদের বিনিয়োগমুখী সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মলপাস বলেন, ‘করোনায় যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটছে তা অসম, এতে অতি দারিদ্র্য ব্যাপকভাবে বাড়ছে। মন্দায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ ‘ ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসবে ৩.৫ শতাংশ।
সান নিউজ/এসএ/এস