নিজস্ব প্রতিবেদক : উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সাচিবিক দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট আইনের ৩৩ ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদ এসোসিয়েশনর পক্ষে করা একটি রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইন সচিবসহ ১৫ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন আমন্ত্রণপত্রে উপজেলা পরিষদ না লিখে উপজেলা প্রশাসন লেখা, উপজেলার বিভিন্ন কমিটিতে ইউএনওদের সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করতে জারি করা পরিপত্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসান এমএস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। সম্প্রতি ইউএনওদের বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের অভিযোগের বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়াল। ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী, ইউএনও পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা।
তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন এবং ৩৩ এর (২) উপ-ধারায় পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য সব কার্যাবলি পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন। বর্তমানে পরিষদের কোনও সিদ্ধান্ত ইউএনও বাস্তবায়ন না করলে পরিষদের কিছু করণীয় নেই। ইউএনও উপজেলা পরিষদের কাছে জবাবদিহিতার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
তিনি আরও বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তাগণ দাওয়াতপত্রে উপজেলা পরিষদ না লিখে উপজেলা প্রশাসন লিখছে যা স্থানীয় সরকার আইনে কোথাও উল্লেখ নেই। এছাড়া সরকারি কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে যতগুলো কমিটি গঠিত হয় এর সবগুলোতে ইউএনওকে চেয়ারম্যান করা হলেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের উপদেষ্টা করা হয়।
এভাবে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় জনপ্রতিনিধিদের প্রায় নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। আইনের ৩৩ ধারাটি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। এটি সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদেরও পরিপন্থী। ৫৯ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হবে। কিন্তু এখানে এর ব্যত্যয় ঘটছে।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, ইউএনও উপজেলা পরিষদে সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তিনি তো উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন। এখন উপজেলা পরিষদ কোনও সিদ্ধান্ত নিলে ইউএনও যখন কাজ করবেন না তখন তো তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা যাবে না। উপজেলা পরিষদকে বসে থাকতে হবে। মূলত এ বিষয়টি আমরা আদালতে তুলে ধরেছি।
সান নিউজ/এসএ