নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ২০০ বছরের পুরোনো একটি ভবন ভাঙার বিষয়ে স্থিতাবস্থা জারি করেছে হাইকোর্ট। ফলে চট্টগ্রাম মহানগরের কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জের ‘বাংলা কলেজ’ এলাকার এই ভবন ভাঙ্গা যাবে না বলে জানিয়েছেন রিটকারি আইনজীবী মাসুদ আলম চৌধুরী।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মহানগরীর ‘বাংলা কলেজ’ এলাকায় অবস্থিত এই ভবন রক্ষায় করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে স্থিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত।
আবেদনের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জের ‘বাংলা কলেজ’ এলাকায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত একটি ভবন রক্ষায় বুলডোজারের সামনে বসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) ওই জায়গার জনৈক ‘ক্রেতা’ পুলিশ ও লোকবলসহ ভবনটি ভাঙতে আসার খবর পেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ছুটে আসেন।
জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারীসহ অনেকেই তার পাশে দাঁড়ান। ভাঙার দৃশ্য দেখে বিদ্যালয়ে ভর্তির ফরম নিতে আসা অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
বাংলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইসহাকের পরিবারের পরিচালনাধীন শিশুদের কিন্ডারগার্টেন ‘শিশুবাগ’র অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান বলেন, প্রিন্সিপাল ইসহাক ১৯৬৬ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু জমি কিনেন এবং কিছু জমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে বাংলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন আধুনিক শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিশুবাগ।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৮ সালে শিশুবাগ সরকারের অনুমোদন পায়। অর্ধশতাধিক বছরের প্রাচীন এ প্রতিষ্ঠানটিতে চসিক নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হিসেবেও তালিকাভুক্ত। জনৈক ক্রেতার ডিক্রির বিষয়ে আমাদের করা মামলা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন জানান, একটি দেওয়ানী মামলায় আদালতের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট নাজির ডিক্রিপ্রাপ্তদের জমি দখল বুঝিয়ে দিতে গিয়েছিলেন। সিএমপির সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের নির্দেশে আমাদের পুলিশ সদস্যরা সেখানে ছিলেন। দখল বুঝিয়ে দেয়া বা উচ্ছেদ করার কাজে কোতোয়ালি থানা পুলিশের কোনো ভূমিকা ছিল না।
সান নিউজ/এমএ/এস