নিজস্ব প্রতিবেদক:
সংবাদপত্রের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ঘরে ঢুকে পড়তে পারে-এরকম ভীতি তৈরি হয়েছে। তাই সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে হকারের হাত থেকে পত্রিকাও নিতে চাচ্ছে না অনেকে।
এমন সংক্রমণ ভীতি সংবাদপত্রের বিক্রি নামিয়ে এনেছে হুহু করে। মাত্র কয়েকদিনেই ছাপানো পত্রিকার বিক্রি কমে গেছে প্রায় অর্ধেক। এ অবস্থায় শুক্রবার দেশের প্রথম সারির দৈনিক মানবজমিন মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। হাতে হাতে বিলি-বিক্রয় করা কাগজের পত্রিকার এমন অচলাবস্থায় অনলাইন গণমাধ্যমের ওপর আস্থা ও চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে পাঠকের। বাসায় ছাপানো পত্রিকা নেয়া বন্ধ করে দিয়ে অনলাইনের ওপর নজর দিচ্ছে মানুষ।
হকাররা বলছেন, অনেক বাসাবাড়িই লকডাউন করে দিয়েছে, কাউকেই তো ঢুকতেই দিচ্ছে না। অনেকেই ফোন দিয়ে বলছে পত্রিকা দিয়েন না। একজন বন্ধ করলেই আরেকজনের মাথায়ও এটা কাজ করে যে, আমরাও বন্ধ করে দিই। এরকম অনেকেই বন্ধ করে দিয়েছেন। হকারদের হিসেবে, গেলে গত ১৫ দিনে ঢাকায় পত্রিকা বিক্রি ৫০ শতাংশ কমে গেছে।
শুধু ঢাকায়ই নয়, গত কয়েকদিনে ঢাকার বাইরের কয়েকটি সংবাদপত্র ঘোষণা দিয়েই ছাপানো বন্ধ করেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলা ভাষাভাষিদের জন্য প্রকাশিত ৯টি সাপ্তাহিক প্রিন্ট পত্রিকা ছাপানো স্থগিত হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাঠক ধরে রাখার চেষ্টা করছে।
সংগঠনটি একটি বিবৃতিও দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, ‘ছাপানো পত্রিকা করোনা ভাইরাস বহন করে না।’
শুক্রবার ঘোষণা দিয়ে দেশের প্রথম সারির দৈনিক মানবজমিনের মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ করা হয়।
দৈনিকটির প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী শুক্রবার পাঠকদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমাদের প্রিয় পৃথিবী আজ এক ভয়ঙ্কর বিপদের মুখোমুখি। করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় দেশে দেশে মৃত্যুর মিছিল। মিনিটে মিনিটে বাড়ছে আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা। আমাদের দেশেও আঘাত হেনেছে এ ভয়াল ভাইরাস। চারদিকে উদ্বেগ-আতঙ্ক। চলছে অঘোষিত লকডাউন। এই পরিস্থিতিতেও জীবনবাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের কর্মীরা। এজেন্ট ও হকাররাও রয়েছেন ঝুঁকির মুখে। সংবাদপত্র বিপণন ব্যবস্থায় নেমে এসেছে বিপর্যয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেই।এ কারণেই আমরা আপাতত মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে আমরা থেমে থাকবো না। মানবজমিন অনলাইন সংস্করণ চালু থাকবে পুরোদমে। প্রতি মুহূর্তে আমরা আপনার কাছে পৌঁছে দেব সর্বশেষ খবর। নিশ্চয়ই এ ঘোর অন্ধকার কেটে যাবে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই আমরা দ্রুত ফিরে যাবো মুদ্রণ সংস্করণে।’