নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম মাস কাটল বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই। আশ্বাস অনুযায়ী প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গার জন্য সব ধরনের মানবিক সুবিধা নিশ্চিত করেছে সরকার। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আবাসন-খাদ্য-চিকিৎসার পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে।
জনমানবহীন ভাসানচরে এখন ভেসে আসে হারমোনিয়াম-তবলা এবং ঢোলের মতো যন্ত্রের তালে তালে গানের শব্দ। সে সঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের কল-কাকলি, বয়স্কদের শোরগোলে সরগরম।
সকাল না হতেই রোহিঙ্গা পরিবারের প্রধানরা ছুটছেন অস্থায়ী বাজারের দিকে। শাকসবজি-মাছ-মাংসে ভরপুর বাজারগুলো। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানও আছে এই ভাসানচরে। বসে গেছে চা-পরোটার দোকান। ভাজা হচ্ছে গরম গরম পরটা। আর রোহিঙ্গা গৃহিণীরা ব্যস্ত সাংসারিক কাজে।
রোহিঙ্গারা জানান, কক্সবাজার থেকে আমরা এখানে ভালো আছি। পরিবেশটা অনেক খোলামেলা। এখানে সব ধরনের সুবিধা রয়েছে। এখানে আসার অন্য রোহিঙ্গাদের আমরা বলছি।
আর দুপুর না হতেই রোহিঙ্গা তরুণরা নেমে যাচ্ছে খেলার মাঠে। ফুটবলের পাশাপাশি চলছে ভলিবল খেলা। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা তরুণদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে তিনটি খেলার মাঠ। খোদ প্রকল্প পরিচালক খেলায় সাথি হচ্ছেন।
মফিজুর নামে এক রোহিঙ্গা তরুণ বলেন, এখানে আমাদের খেলার জন্য মাঠ রয়েছে। সে সঙ্গে একটা ক্লাবও রয়েছে। আমরা সুবিধা পাচ্ছি।
ইতোমধ্যে ভাসানচরে নিরাপত্তার পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা।
ভাসানচরের নৌবাহিনী চিকিৎসা ক্যাম্প ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, চিকিৎসার জন্য আমাদের দুজন চিকিৎসক রয়েছেন। জরুরি সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে রোহিঙ্গাদের সার্বিক উন্নয়নে একে একে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাসানচরে যেতে শুরু করেছেন। শুরু হতে যাচ্ছে শিক্ষাসহ নানা সামাজিক কার্যক্রম।
ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের কুটির শিল্পসহ কাপড় সেলাই প্রশিক্ষণের দেওয়ার জন্য দুটি টিম এসেছে।
আন্তর্জাতিক নানা চাপের মুখে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গত ৪ ডিসেম্বর ভাসানচর পৌঁছে। আর ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ভাসানচর গেছে আরও ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা।
সান নিউজ/এম/এস