নিজস্ব প্রতিবেদক : না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। রোববার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় বনানীর নিজ বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
রাবেয়া খাতুনের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। তিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও একসময় শিক্ষকতা করেছেন। সাংবাদিকতার সঙ্গেও দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। দৈনিক ইত্তেফাক, সিনেমা পত্রিকা ছাড়াও তার নিজস্ব সম্পাদনায় পঞ্চাশের দশকে বের হতো ‘অঙ্গনা’ নামের একটি মহিলা মাসিক পত্রিকা।
তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা একশ’রও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে উপন্যাস, গবেষণাধর্মী রচনা, ছোটগল্প, ধর্মীয় কাহিনি, ভ্রমণ কাহিনি, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথা ইত্যাদি।
রেডিও, টিভিতে প্রচারিত হয়েছে অসংখ্য নাটক, জীবন্তিকা ও সিরিজ নাটক। তার গল্পে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে কয়েকটি। রাবেয়া খাতুন উপন্যাস লিখেছেন পঞ্চাশটিরও বেশি, এ পর্যন্ত চার খণ্ডে সংকলিত ছোটগল্প সংখ্যায় চারশ’রও বেশি।
ছোটদের জন্য লেখা গল্প-উপন্যাসও সংখ্যায় কম নয়। প্রথম উপন্যাস মধুমতী (১৯৬৩) প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই শক্তিমান কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি পান। ক্ষয়িষ্ণু তাঁতি সমপ্রদায়ের জীবনসংকট ও নাগরিক উঠতি মধ্যবিত্ত জীবনের অস্তিত্ব জিজ্ঞাসার মধ্যে ব্যক্তিকে আবিষ্কার করেছিলেন রাবেয়া খাতুন এই উপন্যাসে।
রাবেয়া খাতুন বেশকিছু আত্মজৈবনিক স্মৃতিমূলক রচনা লিখেছেন। একাত্তরের নয় মাস (১৯৯০) বইয়ে লিখেছেন একাত্তরের শ্বাসরূদ্ধকর দিনগুলোর কথা।
সাহিত্যর্চ্চার জন্য পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৯৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৩), নাসিরুদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৯৫), হুমায়ূন স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৯), কমর মুশতারী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪), বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯৪), শেরেবাংলা স্বর্ণপদক (১৯৯৬) ইত্যাদি।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক : রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।