নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজেদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো নিয়ে ব্যস্ত নির্বাচন কমিশনাররা। সিইসি ও কমিশনাররা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দাবী করে নীতিমালার খসড়া অনুমোদন পাশাপাশি পেনশন, আজীবন পেনশন সুবিধা, আপ্যায়ন ও চিকিৎসা সুবিধা এবং তাদের দিতে হবে না কোনও আয়করও।
এ জন্য বিদ্যমান এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের জন্য খসড়া প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্যদিকে প্রশিক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি (৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার) টাকা ভাতা বৈধ করতে নীতিমালা পাল্টে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইসি।
রোববার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে ৭৪তম সভা কমিশন বৈঠকে এ দুটি বিষয় ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনায় বসছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা। বর্তমান জাতীয় সংসদ ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় বিধিবহির্ভূতভাবে প্রশিক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়েছে ইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারবৃন্দ এবংকর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দেয়ার নামে এত টাকা খরচ দেখিয়েছেন। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে আপত্তি জানায় স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদফতরও। অনিয়ম রোধে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই)মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুককে সেই সময়ে ঢাকা থেকে বদলি করা হয়।
তিনি কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বরং এখন আইন পরিবর্তন করে বিষয়টি বৈধ করার প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য আজকের কমিশনের বৈঠকে কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালনায় প্রশিক্ষণ ও বাজেট প্রমিতকরণ নীতিমালা, ২০২০ নিয়ে আলোচনা শেষে অনুমোদন হতে পারে।
সভায় অনুমোদিত পদের বাইরে প্রশিক্ষণ কোর্স উপদেষ্টা, বিশেষ বক্তা ও কোর্স পরিচালক, এই তিন ধরনের পদ রাখা এবং সেই পদের বক্তাদের বক্তব্য ভাতা পরিশোধ নিয়ে আপত্তির বিষয়গুলো তোলা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণে কোর্স উপদেষ্টা ও বিশেষ বক্তার পদ রাখা ও ভাতা দেয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত চেয়েছে ইসি সচিবালয়।
কোর্স পরিচালককে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত হার থেকে বেশি ভাতা দেয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রতি দেড় ঘণ্টায় বক্তব্যে অতিথি বক্তার জন্য ৭ হাজার টাকা ভাতা ধরা হয়েছে। প্রতি কোর্সের জন্য কোর্স উপদেষ্টা ৮ হাজার টাকা, কোর্স পরিচালক ৬ হাজার টাকা, সুপারভাইজিং প্রশিক্ষক ৬ হাজার টাকা ও মনিটরিং কর্মকর্তা ৫ হাজার টাকা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া প্রশিক্ষণ ভাতা নেওয়ার অডিট আপত্তি এসেছে। সে জন্য নীতিমালা সংশোধন করবে ইসি। খসড়া নীতিমালা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের বেতন, ভাতাদি, পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত আইন ২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এতে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা যে সব সুযোগ-সুবিধা পান না তাও রাখা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে পেনশন সুবিধাও। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী নিজ বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরিন ভ্রমণে টিএ-ডিএসহ সব ভাতা চান। তবে মাসিক বেতন, অন্যান্য ভাতা চান উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সমান। একইসঙ্গে তারা ঢাকার বাইরে ভ্রমণের সময় গাড়িতে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা ব্যবহার করতে চান। ৭৪তম বৈঠকে এটিও চূড়ান্ত করতে পারে ইসি।
সান নিউজ/এসএ