সান নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্টের জন্ম তারিখ যাচাই করলে দেখা যাবে, বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি মানুষের জন্ম তারিখ পহেলা জানুয়ারি।
এ বিষয়ে কোন গবেষণা নেই। তবে বিভিন্ন জরিপে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে দেখা গেছে জানুয়ারির এক তারিখের প্রাধান্য রয়েছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরাও এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন।
শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলছেন, ‘বিষয়টি এমন না যে, জানুয়ারির এক তারিখে বেশিরভাগ শিশুর জন্ম হচ্ছে। আসলে এখনো আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিশুদের জন্ম হয় বাড়ীতে, বিশেষ করে যারা গ্রামীণ এলাকায় থাকে। সেখানে এখনো শিক্ষার হারটা ততটা ভালো না। ফলে অভিভাবকরাও জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে ততটা সতর্ক নন।’
‘আবার আমাদের জন্ম নিবন্ধনও সঠিকভাবে সঠিক তারিখে হয় না। বাড়িতে বা হাসপাতালে জন্ম নেয়া শিশুদেরও ঠিকভাবে নিবন্ধন হচ্ছে না। পরবর্তী একসময় যখন তারা স্কুলে ভর্তি হয় বা কোন সার্টিফিকেট পরীক্ষার সময় তার জন্ম তারিখটা দরকার হয়ে পড়ে।’
‘তখন অনেক সময় স্কুলের শিক্ষকরা ইচ্ছেমত একটি তারিখ বসিয়ে দেন। নতুন করে জন্মদিন বসাতে গিয়ে তারা একটি কমন তারিখে জন্মদিন বসিয়ে দেন, যা সহজে মনে রাখা যায়। দেখা যায়, বেশিরভাগ সময়েই সেটা জানুয়ারির এক তারিখ হয়ে থাকে।’ যুক্ত করেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, এ কারণে দেখা যায় এখানে এটা খুবই কমন যে, বেশিরভাগ মানুষের দুইটা করে জন্মদিন থাকে।
এ প্রসঙ্গে তৌফিক রহমান (ছদ্মনাম) নামের একজন বলেন, তার নিজের এবং আরও দুজন চাচাতো ভাইয়ের জন্ম তারিখ ১লা জানুয়ারি।
তিনি বলছেন, ‘অনেকগুলো ভাইবোনের পরিবারে কারো জন্মতারিখই বাবা-মা লিখে রাখেননি। ফলে স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় শিক্ষকরা তারিখটি বসিয়ে দেন।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানেও এই প্রবণতা রয়েছে।
তবে শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলছেন, অনেকের জন্মতারিখ বানিয়ে দেয়া হলেও, এই তারিখেও কিন্তু সত্যিকারে বাংলাদেশে অনেক শিশুর জন্ম হচ্ছে, যাদের জন্মদিন আসলেই ১লা জানুয়ারি।
বছরের প্রথমদিনে বাংলাদেশে জন্ম হচ্ছে সাড়ে ৮ হাজার শিশুর
বছরের প্রথম দিনে সবাই যে নতুন বছরকেই স্বাগত জানাচ্ছে তা নয়, অনেক পরিবার এদিন স্বাগত জানাতে তাদের নতুন ক্ষুদ্রতম সদস্যকেও।
নতুন বছরের প্রথম দিনে বাংলাদেশে ৮ হাজার ৪২৮টি শিশুর জন্ম হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। আর এদিন পৃথিবী জুড়ে জন্ম হতে যাচ্ছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭২টি শিশুর।
২০১৯ সালের প্রথম শিশুটির দেখা পেয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ ফিজি।
ইউনিসেফের হিসাবে, প্রথম দিনে জন্ম নেয়া শিশুদের এক চতুর্থাংশের জন্ম হবে দক্ষিণ এশিয়ায়। আর এদিনের মোট শিশুদের অর্ধেক জন্ম নেবে নীচের আটটি দেশে:
ভারত-৬৯,৯৪৪
চীন- ৪৪,৯৪০
নাইজেরিয়া-২৫৬৮৫
পাকিস্তান-১৫১১২
ইন্দোনেশিয়া-১৩২৫৬
যুক্তরাষ্ট্র-১১০৮৬
ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো-১০,০৫৩
বাংলাদেশ-৮৪২৮
এই শিশুদের অনেকের নানারকম নাম দেওয়া হবে আবার অনেকে হয়তো নাম পাওয়ার আগেই মারা যেতে পারে। সূত্র : বিবিসি বাংলা
সান নিউজ/এম