নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার রাজধানীর জেকেজি হেলথকেয়ারের ডা. সাবরিনা শারমিন হোসেনকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তার জামিন চেয়ে করা আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) মো. মনিরুল ইসলাম বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) মো. মনিরুল ইসলাম।
এর আগে, জামিন আবেদনের বিষয়টি সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আজ আবেদনটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) ছিল। মঙ্গলবার আবারও জামিন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।
সে অনুযায়ী আজ কার্যতালিকায় উঠে আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, বিচারিক আদালতে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য আগামী ৬ জানুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে।
সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও এবং জেবুন্নেসা।
গত ২০ আগস্ট একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। তার আগে গত ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
এই মামলার অভিযোগপত্রে সাবরিনা-আরিফুলকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মূলহোতা এবং বাকি ছয়জনকে অপরাধে সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
করোনার ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্ণধার আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন চিকিৎসক ছিলেন। মামলার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাবরিনা জেকেজির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়।
গত ১২ জুলাই সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন জেকেজির প্রতারণা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডিসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে তেজগাঁও থানায় আগেই আরিফুলের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর থানা হাজতে থাকা অবস্থায় আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী থানায় ভাঙচুর ও হামলা করে এবং পুলিশকে মারধর করে।
এছাড়া, রাজধানীর মহাখালীর তিতুমীর কলেজে করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের নামে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও পাওয়া যায়। কলেজের কক্ষে নারী-পুরুষের আপত্তিকর অবস্থানসহ নানা অনৈতিক কাজে বাধা দিলে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রদের ওপরও হামলা করে আরিফুলের লোকজন।
সান নিউজ/এসএম