নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে পরবর্তী ৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। ৫ বছর মেয়াদি এই পরিকল্পনায় খরচ হবে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ (দেশীয়) উৎস থেকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা, বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৭৪ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতেই আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে এই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। অনুমোদিত হলে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন করবে সরকার।
৫ বছর মেয়াদে ১ কোটি ১৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে উন্নীত করা, জিডিপির ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ বিনিয়োগ ও সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছে এই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়।
এতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১২ লাখ ৩০ হাজার ১২০ কোটি টাকা এবং ব্যক্তি খাত থেকে ৫২ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি উপস্থাপন করা হয়েছে। পরিকল্পনার সারসংক্ষেপ শুনে তিনি এতে সম্মতিও দিয়েছেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড.শামসুল আলম পরিকল্পনার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করবেন।
জিইডি সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প ও নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে এ পরিকল্পনার নীতি ও ধারাবাহিকতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রাগুলো এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এসব লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
এনইসিতে উপস্থাপনের জন্য তৈরি সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, দারিদ্র্যবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় গুণগত শিক্ষা, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা ও করোনা সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট সাময়িক বেকারত্বসহ বিদেশ ফেরত কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃজনের লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
এছাড়া শ্রমবাজরে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করা, আয় বৈষম্য কমানো, সমন্বিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, টেকসই নগরায়ণ, সরকারের ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পরিকল্পনায় ২০২৫ সাল নাগাদ কর-জিডিপির অনুপাত বর্তমানের ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ করা হবে।
রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং বাণিজ্য শুল্কের ওপর নির্ভরতা কমাতে এই দুই লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজস্ব আইন আরও বেশি সংস্কারের মাধ্যমে কর প্রশাসনকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সান নিউজ/এসএ/এস