নিজস্ব প্রতিবেদক:
২৫ মাস কারাভোগের পর শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানে নিজ বাড়ি ফিরোজায় আপাতত কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাড়ি ফিরোজায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, “আমরা শুধু ম্যাডামের সাথে দেখা করতে এসেছি। তিনি খুব অসুস্থ। চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। তার চিকিৎসার ব্যাপারটা নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছুদিন অন্তত ম্যাডামকে যেন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়, অর্থাৎ অন্য কেউ যেন দেখা-সাক্ষাত না করে, সেসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।” তিনি সকল নেতা-কর্মী ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং সকলকে ভালো থাকতে বলেছেন। তিনি কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বলেছেন এবং ভয়াবহ যে মহামারী হচ্ছে, সেজন্য সবাই যেন আমরা সচেতনভাবে চলি এবং নিজেকে বাঁচিয়ে চলি- সে কথা বলেছেন, জানান ফখরুল। বলেন, তিনি কতদিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন সেটা চিকিৎসকরা ঠিক করবেন।
এর আগে বুধবার (২৫ মার্চ) বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি দেওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপির মহাসচিব তাকে গ্রহণ করেন।
এরপর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদা জিয়াকে তার নিশান প্রেটোল গাড়িতে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বুধবার বিকালে ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়। এরপর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, সরকার যে শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে সেই শর্ত মানতে হবে। শর্ত ভঙ্গ করলে তা বাতিল হয়ে যাবে। সরকার চাইলে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করতে পারে বলেও মতামত দেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে খালেদাকে মুক্তির সিদ্ধান্তের কথা জানান। মন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছয় মাসের জন্য খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুটি শর্তে তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে। সেগুলো হলো, এই সময়ে তার ঢাকায় নিজের বাসায় থাকতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
দণ্ড স্থগিতের প্রস্তাব ওই দিন বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী খালেদা জিয়া। তাকে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ কারাগার স্থাপন করে সেখানে রাখা হয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।