নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনার মধ্যে বিশ্বজুড়ে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে করোনার টিকা। বিশ্বের অনেক দেশে করোনার টিকা প্রযোগ শুরু হয়ে গেছে। বাংরাদেশে এই টিকা প্রয়োগ শুরু হবে জানুয়ারী মাস থেকে। প্রথম ধাপে টিকা পাবেন ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ২৮২ জন। কারা থাকছেন এই তালিকায়, সেই আলোচনা মানুষের মুখে মুখে। ইতোমধ্যেই জানা গেছে সবার আগে টিকা পাবেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিটের চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ ৩ লাখ ৩২ হাজার ২৭ জন। বেসরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কভিড ইউনিটের ৬ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী। এরপরেই টিকা পাবেন সরকারি ও বেসরকারি নন-কোভিড হাসপাতালের এক লাখ ২০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। টিকা পাবেন করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা স্বাস্থ্য বিষয়ক এনজিওর কর্মীরাও।
স্বাস্থ্যকর্মীদের পরে প্রথম ধাপেই টিকা পাবেন দুই লাখ ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা। এর পরে পাবেন সংক্রমণ ঝুঁকিতে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৯ সদস্য।
পর্যায়ক্রমে আরো যারা পাবেন- মাঠপর্যায়ের ৫০ হাজার গণমাধ্যমকর্মী, সচিবালয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ৫ হাজার কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য, মেয়র, কাউন্সিলরসহ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ সেবাকর্মী, জরুরি সেবা খাত ও ফায়ার সার্ভিসের ৪ লাখ সদস্য, বিমানবন্দর, স্থল, সমুদ্র ও নৌবন্দরে কাজ করা এক লাখ ৫০ হাজার কর্মী, বিদেশগামী এক লাখ ২০ হাজার অদক্ষ প্রবাসী শ্রমিক, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, এক লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, করোনায় মৃতদের দাফন ও সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার কর্মী, মসজিদের প্রবীণ ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের ৫ লাখ ৮৬ হাজার সদস্য।
এছাড়া এইচআইভি, যক্ষ্মা, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তদের ৬ লাখ ২৫ হাজার জনকে দেয়া হবে এই টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, মহামারি প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৭৮ হাজার টিকা রিজার্ভ রাখা হবে।
৫১ লাখ নাগরিকের নাম চূড়ান্ত করতে কাজ করবে এলাকাভিত্তিক কমিটি। মাইকিং, এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়েও নাম সংগ্রহ করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে অনলাইনেও করা যাবে নাম নিবন্ধন। আর জটিল রোগে আক্রান্তদের নাম চূড়ান্ত করবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে কাজ চলছে। প্রথম ডোজ নেয়ার ২৮ দিন পর নিতে হবে দ্বিতীয় ডোজ। তবে অন্তসত্ত্বা নারীরা টিকা নিতে পারবেন না।
আগামী মে-জুন মাসের মধ্যে দেশে সাড়ে চার কোটি মানুষ টিকা পাবে। জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথমে দেড় কোটি মানুষের জন্য তিন কোটি ডোজ এবং মে-জুন মাসের মধ্যে আসবে তিন কোটি মানুষের জন্য আরো ছয় কোটি ডোজ টিকা। সোমবার (২১ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সান নিউজ/পিডিকে/এস