নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কঠিন দাবি করে পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হলেও মোহাম্মদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে হামলা চালায়।
তারা পরীক্ষার্থীদের খাতা ছিঁড়ে ফেলে এবং পরীক্ষার্থীদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। পরীক্ষা বর্জনের ঘটনা ঘটে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রেও।
কেন্দ্র দুটিতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল ৯টা থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টার মধ্যেই প্রশ্ন কঠিন হয়েছে এমন অভিযোগে লক্ষ্মীবাজারে মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে কিছু শিক্ষার্থী বের হয়ে যায়। এ সময় বর্জনকারীরা অন্যদেরও জোর করে বের করে দেয়। এক ঘণ্টার মতো পরীক্ষা চলার পর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রে একদল সন্ত্রাসী ঢুকে পরীক্ষারত শিক্ষার্থীদের খাতা ছিঁড়ে ফেলে এবং তাদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।
মোহাম্মদপুর কেন্দ্রে অংশ নেয়া এক পরীক্ষার্থী জানান, ২০-২৫ জনের একটি গ্রুপ কলেজের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আমাদের খাতা ছিঁড়ে ফেলে এবং বের করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সনদের দাবিতে আগে থেকেই একদল পরীক্ষার্থী আন্দোলন করছিলো। তারাই এই হামলা করেছে বলে পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা জানান। যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে এভাবে পরীক্ষা নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এইড অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বাদল বলেন, মোট নয়টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরে একটু ঝামেলা হয়েছে। তবে বাকি কেন্দ্রের পরীক্ষা ঠিকভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার ইন্সপেক্টর দুলাল হোসেন বলেন, বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের দাবি প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে, তাই পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ কলেজের ভেতরে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষাই শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত রাজধানীর ৯টি কেন্দ্রে হওয়ার কথা ছিলো। কেন্দ্রগুলো- আজিমপুর গর্ভমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহান উুদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়াদ্দি কলেজ, মোহাম্মাপুর মহিলা কলেজ. মোহাম্মাদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, সেন্ট্রাল ইউমেন্স কলেজ, বিসিএসআইআর হাইস্কুল, গর্ভমেন্ট মোহাম্মাদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ। এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন।
আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য আইনে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভের জন্য প্রথম ছয় মাস ১০ বছর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন আইনজীবীর অধীনে ছয় মাস শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হয়। এরপর বার কাউন্সিল তাকে পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন দেয়। রেজিস্ট্রেশন পাবার পর বার বার কাউন্সিল ঘোষিত সময়সীমা অনুযায়ী তিন ধাপে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এমসিকিউ, লিখিত ও মৌখিক এই তিনটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই অধস্তন আদালতে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করতে পারেন।
সান নিউজ/কেটি