নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিকল্পিত নগরায়ণের লক্ষ্যে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলকে একেক ভাগে ভাগ করে আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করার পরামর্শ দিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদগন। তারা বলেন, বসবাসের উপযোগী ঢাকা গড়তে অঞ্চলভেদে কোথায়, কতটুকু উচ্চতা রাখা হবে তা ঠিক করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আকতার মাহমুদের নেতৃত্বে সংগঠনের কয়েকজন সদস্য বৈঠক শেষে এ পরামর্শ দেন। এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা শহরকে আধুনিক ও বসবাস উপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সৃষ্ট সমস্যাগুলো কীভাবে দূর করা যায় এবং ভবিষ্যতে যাতে কোনও সমস্যা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে নগর পরিকল্পনাবিদদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
কিভাবে রাস্তা হবে, কতটুকু রাস্তা হবে, বসবাসের জন্য আবাসন এলাকা কতটুকু লাগবে, শপিংমল ও স্কুল কোন এলাকায় কতগুলো হবে, সব বিষয় যেন একটি যৌক্তিক পরিকল্পনার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়, সে বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদদের মতামতটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, তারা তাদের অবস্থান থেকে নগরায়নের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। একটি আবাসিক এলাকায় আমরা যদি মনে করি আমাদের ৬ থেকে ১২ হাজার লোক বসবাস করবে, সেখানে একটি স্কুল লাগবে, সেখানে স্কুল এভেইলেবল না তাহলে আবার দুই-তিন বা ৫কিলোমিটার দূরে স্কুলে নিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে গাড়ি ব্যবহার করার কারনে ট্রাফিক জ্যাম বাড়বে। আবাসিক এলাকায় ওষুধের দোকান না থাকলে দূরে যেতে গাড়ি ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেকটি আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার ভেতরে কিছু কিছু সাপোর্ট ও ফ্যাসিলিটি থাকা দরকার সেসব বিষয় তারা তুলে ধরেছেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমাদের রাস্তা কতগুলো আছে এবং অন্যান্য সাপোর্ট কত আছে সেটার ভিত্তিতে এখানে কত লোক বসবাস করবে, একটা ভবন কী ভার্টিক্যাল হবে নাকি হরাইজেন্টাল হবে সেই সিদ্ধান্তটা তার ভিত্তিতে হতে হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, তারা (নগর পরিকল্পনাবিদ) নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে বলেছেন, এটাকে কোনোভাবেই আমরা ভার্টিক্যাল এক্সপানশন এবং হরাইজেন্টাল এক্সপানশন অর্থাৎ বহুতল ভবন বা হাইরাইজ বিল্ডিং বা লোরাইজ বিল্ডিং এটা ডিপেন্ড করবে সেই এলাকার যে সমস্ত সাপোর্টগুলো থাকা দরকার সেগুলো আছে কি না।
যদি না থাকে এবং জোন ভিত্তিক কোথায় কত হাইটের বিল্ডিং হবে এটা নির্ধারণ করার জন্য। আমার কাছে এটা যৌক্তিক বলে মনে হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাব। ড্যাপে রাজধানীতে আবাসিক ভবনের উচ্চতা কতটুকু রাখা হবে, তা ঠিক করতে গত ৮ নভেম্বর আরও দুই মাস সময় দিয়েছে সরকার।
গত ২ সেপ্টেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নতুন ড্যাপের খসড়া প্রকাশ করে। নতুন ড্যাপের বিষয়ে অংশীজনদের মতামত নিচ্ছে রাজউক। অনলাইনে রাজউকের ওয়েবসাইটে ও সরাসরি রাজউক কার্যালয়ে গিয়ে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মতামত দেয়ার সুযোগ ছিল।
নতুন ড্যাপের খসড়া অনুযায়ী, রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমন্ডির মতো এলাকায় সর্বোচ্চ ১৪ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন করা গেলেও জনঘনত্ব অনুযায়ী এসব এলাকায় সর্বোচ্চ ৮তলা ভবন নির্মাণের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে জমির ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ উন্মুক্ত রাখলে ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
সান নিউজ/এসএ