নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের যে কয়টি দেশ এখনও অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও টেকসই জ্বালানির ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া ও তানজানিয়া অন্যতম।
বর্তমান বিশ্বে টেকসই জ্বালানি নীতি গ্রহণে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি লাভকারি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন উল্লেখ করে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।
টেকসই জ্বালানি নীতির বৈশ্বিক অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রতিবেদন আরআইএসই- ২০২০ এর তথ্যমতে, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে টেকসই জ্বালানি নীতিতে অগ্রগতি হয়েছে।
এক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতি করছে সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের দেশ সমূহে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগের তুলনায় বৈশ্বিক নীতিগত অগ্রগতি উল্লেখিত সময়ের তুলনায় নবায়নযোগ্য শক্তি ও টেকসই জ্বালানির ধীরগতি।
বিশ্বব্যাংকের টেকসই জ্বালানি সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের সূচকে (আরআইএসই) ২০২০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি ৭) অর্জনের ৪টি লক্ষ্য যেমন; নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দক্ষতা, বিদ্যুতের ব্যবহার নিশ্চিত করণ এবং দূষণমুক্ত রান্নার সুবিধার বিষয়ে ১৩৮টি দেশে নীতিগত অগ্রগতি বিবেচনা করেছে।
এই ৪ টি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, টেকসই এবং আধুনিক জ্বালানি সুবিধা অর্জনের অব্যাহত প্রয়াস চলছে। বিশ্বব্যাংকের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মখতার দিওপ বলেন, করোনা মহামারির আগে আমাদের যে অবস্থান সৃষ্টি হয়েছিল তা অব্যাহত রাখতে হবে।
মহামারি পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং কম কার্বন নিঃসরণের বিষয়ে নীতি নির্ধারকদের টেকসই জ্বালানি নীতি গ্রহণ এবং জ্বালানি সর্বজনীন সুবিধা লাভের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। তিনি বলেন, পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ এবং পরবর্তী দশকে এসডিজি ৭ টার্গেটের সঙ্গে জ্বালানি নীতির সমন্বয় করতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নীতিগত অগ্রগতিতে ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিদ্যুৎ এবং দূষণমুক্ত রান্নার সুবিধা লাভের সুযোগ ত্বরান্বিত করেছে। ছোট ছোট পাওয়ার গ্রিড এবং স্ট্যান্ড এলোন পাওয়ার সিস্টেম গ্রিডের তুলনায় বিদ্যুৎ সুবিধার জন্য জ্বালানি বিতরণে অভিযোজন বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া এবং তানজানিয়াও জনগনের ক্রয় ক্ষমতা ও ইউটিলিটি ব্যবহারে স্বচ্ছতা সংক্রান্ত নীতিতে অগ্রগতি লাভ করেছে। দূষণমুক্ত রান্না করার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালে সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশগুলোতে বিশেষত বেনিন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া এবং তানজানিয়াতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল এবং লাতিন আমেরিকায় (গুয়াতেমালা) নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিগুলো দ্রুত অগ্রগতি লাভের এক দশক পরে উচ্চ-মধ্যে আয়ের এবং নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।
আরআইএসইর আওতাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে, ২০১০ সালে মাত্র ৩৭ শতাংশ দেশে জাতীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ২০১৯ সালের মধ্যে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ দেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য আইনি কাঠামো প্রণয়ন করেছে বা প্রক্রিয়া শুরু করেছিল।
বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য উন্নত নীতি কাঠামো ছিল। এসব প্রতিবেদনে গ্রিন জোন হিসেবে এবং উন্নতির প্রস্তাব করে ৪৪ শতাংশ দেশকে হলুদ অঞ্চল হিসেবে দেখানো হয়েছে।
২০১৯ সালের মধ্যে আরআইএসইর প্রায় ৭০ শতাংশ দেশ জ্বালানি দক্ষতা পরিকল্পনা তৈরি করেছে। সমীক্ষাভুক্ত দেশগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশ ন্যূনতম এইচভিএসি জ্বালানি দক্ষতার মান সংক্রান্ত নীতি গ্রহণ করেছে।
সান নিউজ/এসএ