নিজস্ব প্রতিবেদক : “বাঙালি নারীশিক্ষার অগ্রদূত, সমাজসংস্কারক ও সাহিত্যিক বেগম রোকেয়ার অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ‘বেগম রোকেয়া দিবস-২০২০’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সকল নারীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। নারী উন্নয়নে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে যাঁরা এবছর ‘রোকেয়া পদক’-এ ভূষিত হয়েছেন, তাঁদের সকলকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
বুধবার বেগম রোকেয়া বিদস উপলক্ষে মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বেবর) দেয়া এক বানীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব স্মৃতিচারণ করেন।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম রোকেয়া’ শুধু একটি নাম নয়, তিনি ছিলেন নারী শিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান। ঊনবিংশ শতাব্দীর কুসংস্কারাচ্ছন্ন রক্ষণশীল সমাজের শৃঙ্খল ভেঙে তিনি নারী জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেন শিক্ষার আলো। ক্ষুরধার লেখার মাধ্যমে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হানেন তিনি। বেগম রোকেয়া তাঁর প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাসের মধ্য দিয়ে নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের কথা উচ্চকণ্ঠে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘নারীদেরও পুরুষদের মতো সমান অধিকার এবং তা রাজনীতির ক্ষেত্রেও। আওয়ামী লীগ যেমন অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে তেমনি নর-নারীর সমান অধিকারেও বিশ্বাস করে।’ তিনি ১৯৭২ সালে সংবিধানের ২৮ (২) নং অনুচ্ছেদে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের ব্যবস্থা করেন। নারী পুনর্বাসন বোর্ড গঠন করেন। মেয়েদের জন্য অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের মন্ত্রিসভায় দুইজন নারীকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের প্রায় সকল ক্ষেত্রে নারীকে সম্পৃক্ত করেছে। আমরা নারীবান্ধব বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে কর্মক্ষত্রে নারীদের নির্বিঘ্নে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছি। নারীর প্রতি সকল ধরনের নির্যাতন প্রতিরোধে রয়েছে কঠোর আইন এবং আইনের প্রয়োগ। রাষ্ট্র পরিচালনা, রাজনীতি, কূটনীতি, আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ, প্রশাসন, আইন-শৃংখলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, তথ্য-প্রযুক্তি, শিল্প ও সাহিত্য, খেলাধুলাসহ সকল ক্ষেত্রে এদেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে।আমাদের নারীবান্ধব নীতির কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও অর্জিত হয়েছে স্বীকৃতি ও সম্মাননা। পূরণ হয়েছে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন।
বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নারী-পুরুষ উভয়কেই একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে।
আমি ‘রোকেয়া দিবস ২০২০’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
সান নিউজ/এসএম