নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরশাসকের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। জনগণ ফিরে পায় ভোট ও ভাতের অধিকার। এ দিবসে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী সংগ্রামী দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
রোববার (০৬ ডিসেম্বর) ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে এ এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন। দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহকিতায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ নৃশংসভাবে হত্যা করার মাধ্যমে অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। তারা জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিকৃত করে। দেশকে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোট ও মৌলিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবারও দীর্ঘ সংগ্রাম করে।
এ আন্দোলন-সংগ্রামে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূতভাবে অংশ নেয়। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন-সংগ্রামে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, নূরুল হুদা, বাবলু, ফাত্তাহ, ছাত্রলীগ নেতা সেলিম-দেলোয়ার, পেশাজীবী নেতা ডা. শামসুল আলম খান মলিন, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটোসহ আরও নাম না জানা অগণতি গণতন্ত্রকামী ও মানুষের রক্ত রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার রাজপথ। স্বৈরাচারী শাসক গণআন্দোলনের কাছে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ভোট ও ভাতের অধিকার। আমি দেশবাসীর এই স্বতঃপ্রণোদিত ত্যাগ ও অধিকার রক্ষায় আপোষহীনতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘নব্বই পরবর্তী ৩ দশকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছে। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেয়ে আমাদের সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে দেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। আমরা গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশে আমরা সপরিবারে জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় ৪ নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মানবতা বিরোধীদের বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রদান করেছে।
এই বাণীতে তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রবিরোধী চক্র এখনও সক্রিয় এবং নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কোন ষড়যন্ত্রই আমাদের সত্য ও ন্যায় এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। আসুন, গণতন্ত্রবিরোধী সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করি এবং দেশের উন্নয়ন ও জণগণের কল্যাণে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
গণতন্ত্র মুক্তি দিবসে গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী দেশপ্রেমিক শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জাতি সকল শহীদের অবদান শ্রদ্ধাভরে সবসময় স্মরণ করবে।’
সান নিউজ/এসএ