নিজস্ব প্রতিবেদক : হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন ফেনীর কারাগারে ভুক্তভোগীকে বিয়ে করা ধর্ষণ মামলার আসামি জহিরুল ইসলাম জিয়া। সোমবার (৩০ নভেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী।
শুনানিকালে পরিবার ও সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলেছেন আদালত। আদালত বলেছেন, “আমাদের দেশে অনেকাংশে ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে ডিভোর্সের মধ্যে শিক্ষিত লোকের সংখ্যাই বেশি, সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রবণতাটা কম।”
শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, “আমরা তো নানাভাবে সমালোচিত হচ্ছি। আসলে ব্যক্তিগতভাবে দুই-একটি পত্রিকার রিপোর্ট দেখে খুব অফেন্ডেড (অপরাধ বোধ) হয়েছি। যেখানে লেখা হয়েছে ‘ধর্ষকের সাথে ধর্ষিতার বিয়ে’ এভাবে তো রিপোর্ট হওয়া উচিত না। আবার নারীবাদী সংগঠনগুলো বলছে এ ধরনের বিয়েতে ধর্ষকরা উৎসাহিত হবে।”
‘যে যা-ই সমালোচনা করুক, আমরা এটাকে উৎসাহিত করবো’ এমনটি উল্লেখ করে বিচারক বলেন, ‘প্রযুক্তির কারণে এখন সমাজে মানুষের সম্পর্ক গড়তেও সময় লাগে না, ভাঙতেও সময় লাগে না। দেখবেন আমাদের দেশে ডিভোর্সের সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। শিক্ষিত লোকদের মধ্যে বেশি হচ্ছে বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রবণতাটা কম।’
পরে আদালত বলেন, ‘রুল দিলাম, জামিন দিলাম, অপব্যবহার করলে জামিন বাতিল করতে পারবে। আর যদি প্রমাণিত হয় যে জামিনের জন্য বিয়ে তাহলে কিন্তু জামিন বাতিল হবে। ঠিক আছে এক বছর দেখি এই বলে আদালত এক বছরের জামিন দেন।’
উল্লেখ্য, মামলার আসামি জহিরুল ইসলাম ওরফে জিয়া উদ্দিনের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীর ৮ নম্বর চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ-পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামে। গত ২৭ মে ভোরে একই ঘরে অবস্থান করা অবস্থায় গ্রামবাসী জিয়া ও অভিযোগকারী মেয়েটিকে আটক করে। স্থানীয়রা দুজনকে বিয়ে দিতে চাইলে ছেলের বাবা আবু সুফিয়ান মেম্বার রাজি হননি। সেদিন মেয়েটি সোনাগাজী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পুলিশ একইদিন গ্রেফতার করে জিয়াকে।
সান নিউজ/পিডিকে/এস