নিজস্ব প্রতিবেদক: গত কয়েক দিন ধরে স্বাস্থমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদেরকে দেশে না ফেরার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দলে দলে ফিরছেন প্রবাসীরা। আজ শনিবার ইতালি থেকে ফিরেছেন শতাধিক বাংলাদেশি। সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছান তারা। পরে তাদেরকে সেখান থেকে সরাসরি আশকোনার হজ্ব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। । ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা ২৩ বাংলাদেশিও আজ শনিবার দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্ভাব্য ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ইতালি থেকে আসা ব্যক্তিদের সেখানে ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
ইতালি থেকে আসা আরও অনেককে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখার মধ্যে এই প্রথম দেশটি থেকে একসঙ্গে শতাধিক ব্যক্তি ফিরলো।
শাহজালাল বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. শাহারিয়ার সাজ্জাদ সান নিউজকে জানান, রোম থেকে দুবাই হয়ে সকাল ৮টায় এই ব্যক্তিরা ঢাকায় আসেন। তাদেরকে আশকোনা হজক্যাম্পে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরে নামার পর পুলিশি পাহারায় বিআরটিসির কয়েকটি বাসে এই ব্যক্তিদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে নেয়া হয়। তবে বিমানটিতে আসা যাত্রীদের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি ডা. শাহরিয়ার।
দুবাই থেকে যখন ফ্লাইট ছাড়ে, তখন আমাদের জানানো হয়েছিল ১২৫ জন পূর্ণ বয়স্ক এবং দেড় বছরের একটি শিশুর কথা। পরে আমরা দেখেছি হিসেব মিলছে না। সংখ্যাটি বেশি হতে পারে। এখন আমরা নিয়ে এসেছি, দেখতে হবে কত এসেছেন।
এদিকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা ২৩ বাংলাদেশি স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে আজ দেশে ফিরছেন। বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় বিকেলে ইনডিগো এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে তাদের ঢাকায় আনা হবে।
বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তাদের কারোর দেহে করোনাভাইরাস সনাক্ত না হওয়ায় গতকাল শুক্রবার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে সবাইকে।
চীনের উহান থেকে গতমাসের ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় নাগরিকদের সাথে ওই ২৩ বাংলাদেশিকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় সেখানে।
তবে বিদেশ ফেরত সবাইকে আশকোনা হজ্ব ক্যোম্পে রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগ তত্ত্ব, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর-এর উপদেষ্টা ড. মুস্তাক হোসেন। তিনি সান নিউজকে বলেন, যাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলে মনে হবে তাদেরকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রাখা হবে। যাদের খুব বেশি সমস্যা নেই তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য অনুরোধ করা হবে।
এর আগে চীনের উহান থেকে আসা ৩১২ বাংলাদেশিদের হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। কারও মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ না পেয়ে ১৪ দিন পর তাদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেয়া হয়।
শনিবার সকাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮১ জন। মৃত্এযূ হয়েছে ৫ হাজার ৪৩৬ জনের। মধ্যে চীনে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ইউরোপের দেশ ইতালিতে এই ভাইরাস সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সেখানে কভিড-১৯ রোগে কয়েকদিনের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। আক্রান্তের সংখ্যাও ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে।