নিজস্ব প্রতিবেদক : পদ্মা বহুমূখী সেতুতে ৩৯তম স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর এই স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে ৬১৫০ মিটার পদ্মা সেতুতে দৃশ্যমান হয়েছে ৫,৮৫০ মিটার। আর মাত্র দুটি স্প্যান বসলেই দৃশ্যমান হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ২৩ মিনিটে মাওয়া প্রান্তের ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূলসেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের।
মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের ওপর টু-ডি স্প্যানটি বসানো হয়েছে। ৩৮তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় ৩৯তম স্প্যান বসানো হলো। অনুকূল আবহাওয়া আর কারিগরি জটিলতা না থাকায় সফলভাবে কার্যক্রমটি সম্পন্ন হয়। প্রকৌশলীদের টার্গেট অনুযায়ী গত মাসেও ৪টি এ মাসেও ৪টি স্প্যান বসানো সম্ভব হয়েছে।
তার আগে, সকাল ৯টায় ৩৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি বহন করে রওনা দেয়। এরপর নির্ধারিত পিলারের কাছে এসে পৌঁছায় সকাল ৯টা ৪০মিনিটের দিকে।
পদ্মা সেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, দুই পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটি পৌঁছে ৬টি ক্যাবলের (তার) মাধ্যমে মূল নদীতে নোঙর করে পজিশনিং করার কাজটি সম্পন্ন করে। এরপর স্প্যানটিকে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়।
তারপর রাখা হয় দুইটি পিলারের বেয়ারিংয়ের উপর। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫৮৫০ মিটার। স্প্যানটি বসানোর জন্য ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীদের কষ্ট পেতে হয়নি। কোনও রকম বাধা ছাড়াই স্প্যানটি বসাতে পেরে খুশি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। পদ্মাপাড়ের মানুষদের মধ্যেও বইছে আনন্দের জোয়ার।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, গত মাসে ৪টি স্প্যান বসানোর মতো ৩৯তম স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে ৪টি স্প্যান বসানোর টার্গেট সম্পন্ন হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারে ৪০তম স্প্যান (স্প্যান ২-ই) বসানোর পরিকল্পনা আছে প্রকৌশলীদের। চলতি বছরের বিজয় দিবসের আগেই মাওয়া প্রান্তে ৪১তম স্প্যানটি বসার কথা রয়েছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর উপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
সান নিউজ/এসএ