নিজস্ব প্রতিবেদন:
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই পালিত হবে এবারের হজ। আর এজন্য ২৩ জুন থেকে হজ্ব ফ্লাইট শুরুর কথা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ব করোনা পরিস্থিতিতে দেশের হজ গমনেচ্ছুদের তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকালকের শেষ খবর পর্যন্ত চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৮ হাজার ৭৫৭ জন। হজ্ব নিবন্ধনের ইতিহাসে সর্বনিম্ন নিবন্ধন হয়েছে এটি।
গত ২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া হজ্ব নিবন্ধন চলবে ১৫ই মার্চ পর্যন্ত। আর মাত্র এক কর্মদিবস বাকি। এর মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১৭৯৬ জন এবং বেসরকারিভাবে করেছেন ৬৯৬১ জন। অথচ চলতি বছর ১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশির হজ বরাদ্দ রয়েছে।
করোনা ভাইরাস আতঙ্ক হজ্ব করতে আগ্রহীদের ওপর প্রভাব পড়েছে। হজ্বে আগ্রহী কেউ কেউ মনে করছেন হজ করতে টাকা দিয়ে যদি না যেতে পারেন তাহলে এই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না।
যার কারণে বেশির ভাগ হজ্ব যাত্রীই হজের জন্য টাকা জমা দিচ্ছেন না। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিবন্ধনের টাকা জমা দেয়ার পর কোনো কারণে যেতে না পারলে টাকা ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ দায়িত্ব নিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার নিবন্ধনের টাকা জমা নেয়ার জন্য নির্বাচিত বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত টাকা ব্যাংকেই জমা রাখা এবং হজ এজেন্সিগুলো যেন ওই টাকা উত্তোলন করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে।
কিন্তু ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর এত প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও হজ গমনেচ্ছুদের আতঙ্ক কাটছে না। করোনা আতঙ্কে মানুষ নিবন্ধনের টাকা জমা না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। ২৩ জুন থেকে হজ্ব ফ্লাইট শুরু করতে হলে নিবন্ধন দ্রুত শেষ করা দরকার। অথচ হজ্ব ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি আরবে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কমপক্ষে দুই মাস সময় প্রয়োজন।
এদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী পাঠানোর জন্য ৭৮৮টি এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হজ্বের টাকা জমা দিলে সরকার ও হজ্ব এজেন্সিগুলোর কাজ শুরু হয়। টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধনের পরই সৌদি আরবে মোয়াল্লেম ফি নির্ধারণ, মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানোর জন্য সৌদি আরবে অর্থ প্রেরণ করতে হয়। এছাড়াও হজে যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা গ্রহণ, হজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। নিবন্ধন শেষে সৌদি সরকারকে হজযাত্রীর চূড়ান্ত সংখ্যাও জানাতে হবে। হজযাত্রীদের সংখ্যানুপাতে বিমানের ফ্লাইট শিডিউল চূড়ান্ত করতে হবে। এসব দায়িত্ব পালনের জন্য দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন সময়মতো টাকা জমা না দিলে পরবর্তীতে কেউ ইচ্ছা করলেও হজে যেতে পারবেন না। কারণ একজন হাজির জন্য সৌদি আরবে বাড়িভাড়া, যানবাহন, মিনা, আরাফাহ্ ও মুজদালিফায় আগাম থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার জন্য অর্থ পরিশোধ এবং সেই দেশের মুয়াল্লিমের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়।
এ বিষয়ে হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, এবার বাংলাদেশে হজ নিবন্ধনের ইতিহাসে সর্বনিম্ন নিবন্ধন হয়েছে। সরকার সময় না বাড়ালে রোববারই শেষ দিন। আর সুযোগ পাবেন না কেউ। প্রাক-নিবন্ধনের পরের সিরিয়ালে চলে গেলে আগের সিরিয়ালের যারা বাকি আছেন তারা আর সুযোগ পাবেন না।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুুল্লাহ বলেন, হজের নিবন্ধন থেকে বিরত থাকলে এ বছর হজ্বে যাওয়া সম্ভব হবে না। হজযাত্রীরা হজের টাকা জমা দিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার দায়িত্ব বহন করবে।
সান নিউজ/সালি