নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নানান অযুহাতে বিদেশ সফর চলছেই। ঘাস চাষ শিখতে ৩২ কর্মকর্তার বিদেশ সফরের সমালোচনার মধ্যেই এবার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে প্রশিক্ষণের জন্য ৬২ কর্মকর্তার বিদেশ সফরে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে । কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তিতে করা হয়েছে ১ কোটি টাকা। এতে প্রত্যেক কর্মকর্তার জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা করে। তবে এই বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে প্রকল্পটি। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে পরামর্শকের পকেটে যাবে ২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০টি অডিও-ভিডিও বা চলচ্চিত্র নির্মাণে চাওয়া হয়েছে ১ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের জন্যও রয়েছে ২ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলছে, সেহেতু এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের আরও কঠোর ও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এ প্রকল্পে যদি একান্তই বিদেশ প্রশিক্ষণে যেতেই হয়, তাহলে ২ জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে ৬০ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতেন। এতে সরকারি অর্থের অপচয় রোধ হতো।’
এবিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি, মোডালিটি এবং সার্ভার ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হলে বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা সেজন্যই এই ব্যবস্থা রেখেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়নি। কেননা আইডিইএ-১ প্রকল্পের ব্যাপক সাফল্য রয়েছে। প্রায় ২০০-৩০০ শতাংশ সফল হয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ৪টি প্রতিষ্ঠানকে সেবা দেয়া। কিন্তু এখন তো ১৩৭টি মূল প্রতিষ্ঠানকে সেবা দেয়া হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শাখা ধরলে অনেক হবে। এটি এখন গণমানুষের প্রকল্প। তাই এর ধারাবাহিকতা রাখতেই দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। একনেকে অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্প গ্রহণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) ডাটাবেজকে সম্প্রসারিত করা হবে।২০৩০ সালের মধ্যে সব নাগরিককে বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া এবং স্বচ্ছ ও নির্ভুল ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নও করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন থেকে গত বছরের ৩১ অক্টোবর প্রথমবার পিইসি সভা এরপর চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সভা। সভায় দেয়া উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সুপারিশ হল- বৈদেশিক স্টাডি ট্যুরের ব্যয় ৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের জন্য ৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
সান নিউজ/এসএ