নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সব রেল কোচে বায়ো-টয়লেট ও অটোমেটিক ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও কমে যাবে। পাশাপাশি ট্রেন যাত্রা আরো আরামদায়ক হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনে সনাতন পদ্ধতিতে মানববর্জ্য ফেলার কারণে নষ্ট হচ্ছে রেলপথ ও পরিবেশ। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগের ফলে একটি রেল কোচ পরিষ্কার করতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ এক মিনিট।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মানববর্জ্যে কারণেই বঙ্গবন্ধু সেতুর রেলের ক্লিপ মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই ক্লিপ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য এমন উদ্যোগ নেয়া হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পশ্চিম) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা বলেন, বায়ো-টয়লেট না থাকায় রেলপথে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। কারণ মানববর্জ্য অধিকাংশ সময় রেলপথ ও যমুনা রেলসেতুতে ফেলা হয়। ফলে রেলপথের ক্লিপ কম সময়ে মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রেলের ক্লিপ দ্রুত সময়ে পরিবর্তন না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে। প্রতিটি কোচের নিচে দামি দামি যন্ত্রাংশও তাড়াতাড়ি নষ্ট হচ্ছে। তাই বায়ো-টয়লেট সংযুক্ত করে উন্নত দেশের মতো আধুনিক সেবা দেয়া হবে।
মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা আরো বলেন, বায়ো-টয়লেট স্থাপনের সুবিধা হলো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে একটা নির্দিষ্ট সময়ে বর্জ্য পরিষ্কার করা যাবে, যা স্বয়ংক্রিভাবে সম্পন্ন হবে। এর ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা অনেকাংশে কমে যাবে।
এদিকে ২০১৫ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২১ সালে সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি প্যাকেজের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্যাকেজে ২০০টি মিটারগেজ ক্যারেজ, ৫০টি ব্রডগেজ ক্যারেজ ও দুটি অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট সংগ্রহ ও স্থাপন করা হবে।
জানা গেছে, ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংশোধন ও ভেরিয়েশন প্রস্তব অনুমোদনের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি (পিআইসি) সভায় আলোচনা করা হয়েছে। নতুন এই সংযোজন চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত করা হবে। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। চুক্তিপত্রের স্পেসিফিকেশনের বাইরে ক্যারেজ বায়ো টয়লেট সংযোজনের জন্য ও অটোমেটিক ওয়াশিং প্ল্যান্টের নকশা পরিবর্তন হওয়ায় প্রকল্পের সংশোধন ও ভেরিয়েশন করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই-উন্নয়ন) ও প্রকল্পের পরিচালক মো. বোরহান উদ্দীন বলেন, প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১১টি আইটেম সংযোজন করা হচ্ছে। ঢাকা ও রাজশাহী স্টেশনে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় হবে মোট ৩০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, পিআইসি সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নতুন আইটেমের মধ্যে অন্যতম রেল কোচে বায়ো টয়লেট সংযোজন। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি পাস হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা-রাজশাহী বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে যুক্ত হয় অত্যাধুনিক বায়ো টয়লেট।
সান নিউজ/এসএম