নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১৭ মার্চ প্যারেড গ্রাউন্ডের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত বরা হয়েছে। জনসমাগম হবে এমন যে কোন অনুষ্ঠানও নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি পরিবর্তন আনা হয়েছে সব ধরণের কর্মসূচিতে। আসছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিদেশি অতিথিরা।
রবিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় গণভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কমিটির অন্যান্যদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
জানা গেছে, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে তিন জনের আক্রান্তের বিষয়টি গতকাল প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। এটা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য বড় সমাবেশ এড়িয়ে চলার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের একটি টিম। এসময় তারা আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের কর্মসূচি স্থগিত করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেন, দেশ ও জনস্বার্থে আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের প্যারেড গ্রাউন্ডের মুল অনুষ্ঠান স্থগিত করতে হবে। সবকিছু বিবেচনা করে মুজিববর্ষের সব আয়োজন পুণর্বিন্যাসের নির্দেশ দেন।
পরে এ বিষয়ে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দেশ ও জনস্বাস্থের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হবে উদ্বোধন অনুষ্ঠান। তবে জনসমাগম এড়িয়ে বছরব্যাপী উদযাপন করা হবে মুজিববর্ষ। কোনো অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়নি। কর্মসূচি যেভাবে সাজানো হয়েছিল সেটা পুনর্বিন্যাস করা হবে।
বিদেশি অতিথিদের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কামাল আবদুল নাসের বলেন, মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের আসার কথা ছিল আপনারা জানেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি বিদেশি অতিথিদেরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিদেশি অতিথিরা আপাতত আসবেন না। পরে তাদের ডাকা হবে। যেহেতু আমরা বর্তমান কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করছি, সেহেতু নতুন কর্মসূচি আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও জনসমাগম পরিহার করার কথা বলা হয়েছে। প্যারেড স্কয়ারে জনসমাগমের যে অনুষ্ঠানটি সেটাকে পুনর্বিন্যাস করে পরবর্তীতে করা হবে। ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, টুঙ্গীপাড়ায় জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশব্যাপী বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা আয়োজন করা হবে। এদিন জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
আজ সোমবার জাতীয় কমিটির সভা আছে, সেখানে কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানানো হয় সংবাদ সন্মেলনে।