নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ট্রেন যাত্রা নিরাপদ করতে এবং সময় বাঁচাতে ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ৩য় লাইন ও ৪র্থ রেল লাইন নির্মাণ করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় । এ জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রেলওয়ে। কিন্তু বিমানবন্দর এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের কারণে প্রকল্পের কার্যক্রম ঝুলে যাচ্ছে।
সম্প্রতি রেল মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়ও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
এ বিষয়ে রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, রেলের ৩য় লাইন ও ৪র্থ লাইন প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জমির সমস্যার কারণে কাজটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। প্রকল্পের জন্য বিনামূল্যে জমি দিতে বেবিচককে প্রস্তাব দিলে তারা সম্মতি দেয়নি।
জানা গেছে, রেলওয়ে এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) মধ্যে জমির বিরোধের সূত্রপাত হয় ১৯৬১ সালে। তেজগাঁও বিমানবন্দর কুর্মিটোলায় স্থানান্তর করা হয় এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। ঢাকা-টঙ্গী রেললাইন তখন তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর ও কুর্মিটোলা হয়ে টঙ্গী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এ সময় প্রায় ৫০ একর রেলভূমি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের মধ্যে পড়ে যায়।
এ জমি তৎকালীন এয়ারপোর্ট ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (এডিএ) প্রয়োজন হয়। বিমানবন্দরের জন্য তখন রেলের জমি দিয়ে দেওয়া হয়। এর বিকল্প হিসেবে তৎকালীন পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়েকে ডাইভারশন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জোয়ার সাহারা ও দক্ষিণখান মৌজায় জমি দেওয়া হয়। কিন্তু পরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নামে দক্ষিণখান মৌজার জমি রেকর্ড করা হয়। এর ফলে সমস্যা নতুন করে ঘনীভূত হয়।
রেল মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত নথিতে বলা হয়, আরএস তথা রিভিশনাল সার্ভের সময় দক্ষিণখান মৌজার ১০৩ একর এবং জেয়ারসাহারা মৌজার ৬৯.২৪ একর জমি রেলের নামে রেকর্ড করা হয়। কিন্তু সিটি জরিপে দক্ষিণখান মৌজার ১০৩ একর বেবিচকের নামে রেকর্ডভুক্ত হওয়ায় এ নিয়ে মামলা করা হয়। মামলা এখনো বিচারাধীন।
জোয়ারসাহারা মৌজায় ৬৯.২৪ একর জমির বিষয়ে মামলা বিচারাধীন থাকায় আগে থেকেই মিলিনিয়াম হোল্ডিংস লিমিটেডের মাধ্যমে ৫ তারকা একটি ভবনের কাজ ঝুলে আছে। আর এখন ঝুলে যাচ্ছে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ। মামলার পরিবর্তে নিজেরাই মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনো ফল আসেনি।
রেল এ জমি বিনামূল্যে বেবিচক থেকে নিতে প্রস্তাব করে গত ৫ নভেম্বরের সভায়। এতে সম্মতি দেয়নি বেবিচক। জমির মালিকানা বিরোধ নিরসনে ২০১১ সাল থেকে দফায় দফায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বিরোধ নিরসনে প্রথম বৈঠক হয় ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
তখন এক মাসের মধ্যেই এটি সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। বৈঠক হলেও নেওয়া হয়নি উদ্যোগ।
সান নিউজ/এসএ