নিজস্ব প্রতিবেদন:
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা। অনেক চিকিৎসকই যেতে চাইছেন না করোনা আক্রান্ত রোগীদের কাছে। মানবসেবার পরম ধর্ম নিয়ে যারা সহাস দেখিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের অনেকেই আবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে আশার খবর জানালেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য রোবট চিকিৎসক বানিয়েছেন বাংলাদেশের একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একদল শিক্ষার্থী। রোবটটির নাম দেয়া হয়েছে ‘মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল’।
নির্মাতাদের দাবি, রোবটটি করোনায় আক্রান্ত রোগীর শরীরের তাপমাত্রা, হার্টবিট, রক্তচাপ ও অক্সিজেনের পরিমাণ করতে পারবে। একই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে ওষুধ ও খাবার সরবরাহও করতে পারবে রোবটটি।
ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক) আবুল কাশেমের সহযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান, আনাসুর রহমান, মীর আমিন, মেহেদী হাসান ও ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল মোন্নাফ রোবটটি বানিয়েছেন।
আবুল কাশেম বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য উপযোগী করে তুলতে রোবটটিতে বি.পি মনিটর, পালস অক্সিমেটরি সেন্সর, ই.সি.জি সেন্সর, জি.সি.ইউ সেন্সর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও থার্মাল স্ক্যানার যুক্ত করা হয়েছে। আর চলাফেরার জন্য ক্যামেরা ও আল্ট্রাসনিক সেন্সর বসানো হয়েছে।
রোবট নিয়ন্ত্রণে স্থাপন করা হয়েছে রেসবেরি পাই, আরডোইনো মেগা ও আরডোইনো ইউএনও । সালাম দেওয়াসহ দেশের নাম, জাতির জনকের নাম ও প্রধানমন্ত্রীর নাম বলতে পারে এ রোবট।
হাসপাতালে ডাক্তার না থাকলেও এ রোবট যেন চিকিৎসকের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে সে জন্য এটিকে আরও আধুনিক ও উন্নত করার চেষ্টা করাছনে নির্মাতারা।
রোবটটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। তবে সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রোবটটি আরও উন্নত করা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী যখন হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা, তখন চিকিৎসকের বিকল্প হতে পারে এই রোবট।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন খান জানান, এ প্রজেক্টটি কারিগরি শিক্ষা বিভাগে উন্থাপন করেছেন তারা। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে মন্ত্রণালয়।