আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন ডেমোক্রেটিক পার্টির নীতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘনিষ্টতা আছে। এ কারণে বাইডেন সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইতিবাচক হবে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, মানবাধিকার এমন আরও নানা ইস্যুতে বাইডেন সরকারের অবস্থান বেশ বলিষ্ঠ। বাংলাদেশ এ থেকে উপকৃত হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক বিষয়ে এমন মন্তব্য করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ করে বাইডেন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়ায় বাংলাদেশ পরোক্ষভাবে হলেও এর সুবিধা ভোগ করবে বলে জানান তিনি। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশকে দেওয়া জিএসপি বা বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা বাইডেন সরকার পুনর্বহাল না করলেও ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও কিছু ক্ষেত্র প্রসারিত হতে পারে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট নিরসনেও বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক সমর্থন আরও জোরালো হবে বলে মনে করছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাইডেন সরকার অভিবাসন-বান্ধব হওয়ায় বাংলাদেশ সরাসরি এর সুবিধা পাবে বলেও জানান আব্দুল মোমেন। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশীরাও মনে করছেন, উদারনীতির এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করায় আমেরিকায় বাংলাদেশিদের প্রবেশ ও বসবাসের সুযোগ বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর কাজের সুযোগ, সেইসঙ্গে নাগরিকত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে বলেও জানান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেন্ট ভিসা সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। জো বাইডেনের জয়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ভিসা পুনরায় চালু হবে। অভিবাসন প্রত্যাশীরা আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবে বলে আশা করছেন সেখানে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিরাও।
আবার যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং অবৈধভাবে বসবাস করছেন তাদেরও বৈধতা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন মনে করেন, বাইডেন জয়ী হওয়ায় বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ কিছু সুবিধা পাবে। বাইডেন শুরু থেকেই বলে আসছেন তিনি প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন করবেন।
এ ব্যাপারে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ, এ কারণে বাইডেন ওই চুক্তিতে ফিরলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আগের চাইতে বেশি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এ ছাড়া ট্রাম্প সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘকে চাঁদা দেওয়া বন্ধ রেখেছিল, বাইডেন সরকার সেটা পুনরায় চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় বাংলাদেশ পরোক্ষভাবে হলেও সুবিধা পাবে বলে মনে করেন তৌহিদ হোসেন।
জো বাইডেনের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা।
সান নিউজ/এসএ