নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের মাত্র ১৯ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্যাকেজের আওতায় অর্থ সুবিধা পেয়েছে। মূলত বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোই এ সুবিধা বেশি নিয়েছে। অন্যদিকে ৭২ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা পায়নি। অবশিষ্ট ৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্যাকেজ সম্পর্কে পর্যাপ্ত কোন তথ্যই জানে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।
কোভিড-১৯ ও ব্যবসায় আস্থা : অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে শীর্ষক এ জরিপের ফল নিয়ে শনিবার ( ৭ নভেম্বর) ওয়েবিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। চলতি বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন ছিল, তা নিয়ে ৫০২টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ জরিপ করা হয়। এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এ জরিপ করা হয়।
জরিপের ফল তুলে ধরেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। পরে জরিপের ফলের ওপর অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা আলোচনা করেন।
সানেম জানায়, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ১৯ শতাংশ প্রণোদনার অর্থ পেয়েছে। তবে বড় প্রতিষ্ঠান বেশি পেয়েছে। ৩০১টি ছোট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্রণোদনা পেয়েছে। মাঝারি আকারের ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০ শতাংশ এ সুবিধা পেয়েছে। জরিপে ১৫৭টি বড় প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে ৪১ শতাংশ প্রণোদনার টাকা পেয়েছে।
অন্যদিকে প্রণোদনার অর্থ পেতে দীর্ঘ প্রক্রিয়া, ব্যাংকের সব শর্ত মানতে না পারা, প্রণোদনা সম্পর্কে তথ্যের অভাব- মূলত এসব কারণেই ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রণোদনার টাকা পাচ্ছে না। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রণোদনার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ফলে পুরনো গ্রাহকরা বেশি অর্থ পেয়েছেন। ব্যাংক নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা ছোট ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন না।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খানের মতে, করোনায় ছোট ব্যবসায়ীরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারছেন না। বড় প্রতিষ্ঠান হয়তো অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ এনে নিজেদের টিকিয়ে রাখছে। সহজ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও এমডি মালিহা এম কাদির জানান, স্টার্টআপ ব্যবসার জন্য করোনার প্যাকেজে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাজেটে যে তহবিল ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে টাকা পেতে অনেক সময় লাগবে।
এর আগে এপ্রিল-জুন নিয়ে এমন আরেকটি জরিপ করে সানেম। সে জরিপের সঙ্গে এবারের জরিপের তুলনা করে সানেম জানায়, গত এপ্রিল-জুন সময়ের তুলনায় জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা বেড়েছে। কিন্তু কোভিড-১৯ আসার আগে যে ধরনের আস্থা ছিল, তেমন আস্থা আসেনি ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
ওয়েবিনারে আরও সংযুক্ত ছিলেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ, এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ প্রমুখ।
সান নিউজ/এসএ