নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদের দশম (বিশেষ) অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে এ অধিবেশন। বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিবেন তাই বাড়তি প্রস্ততিও নেয়া হচ্ছে।
সংসদ সচিবালয়ের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, রোববার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ-২০২০) উপলক্ষে এই অধিবেশনকে বিশেষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অধিবেশনের প্রথম দিনে শোক প্রস্তাব ও অধ্যাদেশ উত্থাপন করা হবে। পরদিন ৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণ এর মধ্যে দিয়ে অধিবেশনের শুরু হবে। বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় রাজনৈতিক জীবন নিয়ে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার পর তা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সাধারণ প্রস্তাব আনা হবে। প্রস্তাবের ওপর সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে তা পাস হবে।
সংসদ সংশ্লিষ্টরা জানান, সংসদ সদস্য, সাংবাদিকসহ সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা চলছে। বিশেষ অধিবেশনকে সামনে রেখে প্রস্ততি শেষ পর্যায়ে। সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টার ও মেডিক্যাল সেন্টারে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। করোনা নেগেটিভ ব্যক্তিরাই বিশেষ অধিবেশনে প্রবেশ করতে পারবেন।
করোনাকালীন বিগত তিনটি অধিবেশনের মতো আগামী অধিবেশনেও সংসদ সদস্যরা রোস্টার ভিত্তিতে অংশ নেবেন। তবে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার দিন ৯ নভেম্বর করোনা নেগেটিভ সব সংসদ সদস্য অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন। এদিন প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, বিদেশী কূটনীতিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা সংসদ গ্যালারিতে উপস্থিত থাকবেন।
সংসদ ভবন ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবনের অধিবেশন কক্ষে স্পিকার যেখানে বসেন, তার পেছনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি টানানো হয়েছে। সংসদ ভবনের লেকে ভাসানো হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য দৃষ্টিনন্দন দুটি নৌকা। দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রতীক এই নৌকা তৈরি করেছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।
সংসদ লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০ বাণী নিয়ে আলো-ছায়ার দৃষ্টিনন্দন কোলাজ করা হয়েছে। সংসদ ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় প্যাণ্ডেল করে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আলোকচিত্র ও প্রামাণ্য দলিলে পাকিস্তানের গণপরিষদ, স্বাধীন দেশে নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদে বঙ্গবন্ধুর কাজগুলো তুলে ধরা হবে।
একটি রাষ্ট্রের জন্ম, সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য বঙ্গবন্ধু যা করেছেন তা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি সংসদে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বক্তব্যও বাজানো হবে। এছাড়া সংসদ ভবনের ভিতর ও বাহির বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে বিশেষ অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর স্মারক বক্তৃতা করবেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর ওপর সাধারণ আলোচনা হবে।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী বলেন, শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে অধিবেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো শৈথিলতা দেখানো হবে না।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত ২২ মার্চ সংসদের বিশেষ অধিবেশন (সপ্তম অধিবেশন) আহ্বান করা হলেও দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করেন রাষ্ট্রপতি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নতুন অধিবেশন ডাকা হয়েছে। আগামী ৯ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে বিশেষ অধিবেশন। বাকী সময় চলবে সাধারণ অধিবেশন। আগামী ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত অধিবেশন চলবে।
সান নিউজ/এসএ/এস