নিজস্ব প্রতিবেদক:
আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা ওই দম্পতির পরিবারের বাইরের এবং একেবারেই অপরিচিত।
সোমবার (২মার্চ) হাইকোর্টে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তদন্ত কর্মকর্তার জমা দেয়া এ মামলার অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আদালতের পূর্ব নির্দেশনা অনুসারে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার শফিকুল আলম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দু’জন অপরিচিত ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টি-শার্টে ওই দুই ব্যক্তির ডিএনএ’র প্রমাণ মিলেছে।
র্যাবের তদন্ত ও ফরেনসিক বিভাগের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘আমরা একটি প্রতিবেদন উচ্চ আদালতে দিয়েছি। আদালতকে তদন্তের অগ্রগতি জানানো হয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই মামলায় আসামি তানভীরের ভূমিকা রহস্যজনক। এই মামলা থেকে তাকে বিচারিক আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আমেরিকায় পাঠানো ডিএনএ নমুনার সঙ্গে অপরিচিত দুই ব্যক্তির ডিএনএ’র মিল পাওয়া গেছে।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের জন্য কিছু আলামত আমেরিকাতে পাঠিয়েছিলাম। আলামত থেকে দুজন অপরিচিত ব্যক্তির ডিএনএ শনাক্ত হয়েছে। এই ডিএনএ’র মাধ্যমে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের একটি মুখাবয়ব আঁকার চেষ্টা চলছে। এই বিষয়টি আমরা হলফনামা আকারে উচ্চ আদালতের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জমা দিয়েছি। সেটা আদালতে জমা হবে।’
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর এ মামলার সন্দেহভাজন আসামি তানভীরের জামিনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালত তার রায়ে বলেন, সামগ্রিক ঘটনা ও আইনগত অবস্থা বিবেচনায় সাগর-রুনি হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সন্দেহভাজন আসামি মো. তানভীর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। একইসঙ্গে সামগ্রিক অবস্থা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ৪ মার্চ বা তার পূর্বে এ মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা এবং অপরাধের সঙ্গে বর্তমান আসামি তানভীরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন হলফনামাসহ দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব এ মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরের দিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।