নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনকে কেন্দ্র করে দিল্লিরি দাঙ্গায় ৪২ জনকে হত্যা এবং মুসলমাদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার পর মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি করে বিভিন্ন দল ও সংগঠন। তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে সরকারি দলের সাধারন সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত বৃহস্পতিবার বলেন, মুজিববর্ষে ভারতীয় প্রতিনিধিত্ব বাদ দেয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। এর তিন দিন পর আজ রবিবার (১ মার্চ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল- ২০২০’-এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে মোদি ঢাকায় আসছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে আগামীকাল সোমবার ঢাকায় আসবেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব । অতিথি হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকে আমরা সর্বোচ্চ সম্মান দেব। একই সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথিরা যেন দেশের জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটান সে প্রত্যাশাও করি আমরা।
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদও আসতে পারেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মাহাথির মোহাম্মদ বর্তমানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নেই। কিন্তু ব্যক্তি মাহাথিরও আমাদের অতিথি হিসেবে আসতে পারেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, নাগরিক আইনের জেরে দিল্লিতে যে সহিংসতা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ।
মুজিববর্ষের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে আসা প্রতিহত করতে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, বামপন্থী এবং ইসলামীক দলগুলো। মোদিকে সাম্প্রদায়িক খুনি হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শনিবার বামজোটের এক বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা বলেন, হিন্দুুত্ববাদী বিজিপি সরকারের সাম্প্রদায়িক উন্মাদনায় দিল্লি জ্বলছে। সেই বিজিপি সরকারের প্রধান নরেন্দ্র মোদি মুজিববর্ষে বাংলাদেশে এলে তা হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অসম্মান। এর পরও মোদি এলে আগামী ১৫ মার্চ ঢাকায় কালো পতাকা প্রদর্শ ও ১৬ মার্চ সারাদেশে বিক্ষোভ করার ঘোষণা দেয় বামজোট।
ডাকসুর ভিপি নূরুল ইসলাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে একজন সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি আমন্ত্রণ পেতে পারে না।
মোদিকে আমন্ত্রণের প্রতিবাদে গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিক্ষোভ করেছে ইসলামি দলগুলো। জুমার নামাজের পরে অনুষ্ঠিত ওই বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতারা বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি তোলেন এবং মোদিকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।