নিজস্ব প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে নিজ বাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের একদিন পর বসতঘরের পাশে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী ও তাদের ১২ বছর বয়সী শিশুপুত্রের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আটক ছোট ভাই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, তিনজনকে ঘুমের মধ্যে মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) এ তথ্য জানান। তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহত আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলামসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবার এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের পর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা দীন ইসলামসহ অন্যদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিলন বলেন, শুধু রোগাক্রান্ত দীন ইসলাম, তার বৃদ্ধা মা ও বোনের দ্বারা তিনজনকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া খুনি থাকতে পারে বলে তার ধারণা।
বনগ্রাম ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. জাহাঙ্গীর জানান, কিছুদিন আগে আসাদের মা জমি নিয়ে বিরোধ সংক্রান্ত বিষয় মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে দরখাস্ত দিয়েছিলেন। শনিবার (৩১ অক্টোবর) আসাদের বাড়িতে শালিস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই নির্মম এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
অপরদিকে নিহত স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কটিয়াদী উপজেলার জামষাইট গ্রামে নিজ বাড়ির আঙিনা থেকে একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন মুদি দোকানি আসাদ মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী পারভীন (৩৮) ও তাদের ছোট ছেলে লিয়ন (৭)। জমি নিয়ে বিরোধে তাদেরকে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির আঙিনায় মাটির নিচ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ও মাসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জামষাইট গ্রামের মুদি দোকানি আসাদের সাথে জমি নিয়ে তার ছোট ভাই লিটনের বিরোধ ছিল। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতো। বুধবার রাতে আসাদ, তার স্ত্রী পারভীন ও ছোট ছেলে লিয়ন বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়।
আসাদের মেঝো ছেলে মোফাজ্জল বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়িতে গিয়ে বাবা, মা ও ছোট ভাইকে না পেয়ে থানায় গিয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ আসাদের বাড়িতে গিয়ে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলাম (৩৫), মা কেওয়ার মা (৮০), বোন নাজমা আক্তার (৪২) ও ভাগ্নে আল আমিনকে (২৫) আটক করে পুলিশ।
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
সান নিউজ/এম/এস