বাংলাদেশে প্রতি বছরই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় হাজার হাজার মানুষ। কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। নিরাপদ সড়ক চাই এর হিসেবে ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫ হাজার ২২৭ জন । আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৯৫৩ জন। ২০১৮ সালের চেয়ে নিহতের সংখ্যা ৭৮৮ জন বেশি। শুধু মানুষ মারা যাচ্ছে না, ক্ষতি হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ স্কেফার জানিয়েছেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রতি বছর জিডিপির তিন থেকে পাঁচ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের। সড়ক দুর্ঘটনা এখন শুধু মানবিক নয়, অর্থনৈতিক সমস্যা হয়েও দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ও সড়ক ব্যবস্থা নিরাপদ করতে আগামী দশকে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করতে হবে প্রায় ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমান প্রায় ৬৬ হাজার তিনশ কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখপাত্র মেহরিন-এ-মাহবুব স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বছরে সড়ক দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যুহার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে দ্বিগুণ। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু এবং কর্মক্ষম মানুষ। ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনা শিশু মৃত্যুতে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। ১৯৯০ সালে যা ছিল নবম বৃহত্তম।
বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপদ সড়কে অবকাঠামোগত নকশায় নতুনভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। যাতে করে মানুষ, প্রাণি, পথচারী, সাইকেল, রিকশা, মোটরসাইকেল, মোটরযুক্ত তিন চাকার গাড়ি, বাস, ট্রাক, কৃষি যানবাহনসহ সব ধরনের যানবাহন নিরাপদে চলাচল করতে পারে।
প্রতিবেদনে আঞ্চলিক বাণিজ্য করিডোরগুলিতে দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সারাদেশের সড়ক ব্যবহারকারী পথচারী, প্রাণি এবং সব ধরনের যানবাহন চলাচলে পর্যাপ্ত কোনো সড়ক সুবিধা নেই। টেকসই সড়ক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বিনিয়োগের দীর্ঘস্থায়ী করতে হবে বাংলাদেশেকে। তা না হলে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। সড়কে মৃত্যুহার বাড়তেই থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে পরামর্শ দেয়া হয়, এখনই সড়ক নিরাপত্তায় বেশি নজর দেওয়া উচিৎ বাংলাদেশের।