নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের যাবতীয় চেক সংক্রান্ত মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি শুধুমাত্র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর এই আদালতের রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল আবেদন করা যাবে। একইসঙ্গে, যেসব মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে তা ১৫ দিনের মধ্যে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ রায়ে দেশের সকল জেলা ও দায়রা (অধস্তন) আদালতকে অবহিত করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এ বিষয়ে নির্দেশনাও জারি করতে বলা হয়েছে। রায় পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশনা জারি করতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার এএএম জিয়াউর রহমান নামের ব্যক্তির করা চেক সংক্রান্ত এক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে রোববার (১৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এক রায়ে এমন নির্দেশনা দেন। আদালতে আজ আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মাজেদুল কাদের ও ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, এখন থেকে নেগোশিয়েবল ইনস্টুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট-১৮৮১ এর ১৩৮ ধারার অধীনে চেক প্রতারণার মামলার প্রাথমিক শুনানি বা বিচার হবে শুধুমাত্র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। আর এই আদালতের রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র সংশ্লিস্ট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করা যাবে।
একইসঙ্গে, আর যেসব মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে তা ১৫ দিনের মধ্যে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই নির্দেশনা দেশের সকল জেলা ও দায়রা আদালতকে অবহিত করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক এম জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা করে। মামলাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। ওই তিন মামলার কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তিনি। এ রিট আবেদনের পর হাইকোর্টে রুল জারি করা হয়। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ এই রায় দেন হাইকোর্ট।
ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব আরও বলেন, বর্তমান এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ নম্বর ধারার অধীনে চেক প্রতারণার মামলার শুনানি হয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। কোন আদালতে শুনানি হবে তা নির্ধারণ করে দেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। যুগ্ম জেলা জজ আদালতের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। আর অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত কিংবা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশ ও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হচ্ছে হাইকোর্টে। ফলে বিচারিক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে একটি নির্দিষ্ট আদালতে মামলার শুনানি এবং একটি নির্দিষ্ট আদালতে আপিল দাখিল হওয়া প্রয়োজন।
সান নিউজ/এনকে/এস