নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে লাগামহীন ভাবে চলছে শাক-সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীর সকল পণ্যের বাজার। বাজারে যেকোন সবজি সর্বনিম্ন দাম ৬০ টাকা দেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৩০ টাকায় মিলছে।
গেল এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও কেজি প্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে সব প্রকার সবজির। বর্তমনে মুরগি ও ডিমের দামও বাড়তি পর্যায়ে রয়েছে। দেশি মুরগি ও ছোট মাছের বাজারে দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। তবে নতুন করে দাম না বাড়লেও আগের চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ, চাল, ডাল, ভোজ্য তেলের বাজার।
এদিকে শাক-সবজির বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, সবজির মৌসুম না হওয়া আর সম্প্রতি অতি বৃষ্টির ও বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় বাজারে সবজির সংকট বেড়েছে। আর ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কোনো পণ্যের সংকট না হলেও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের খুচরা বাজার, মহাখালী, রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, হাতিরপুল, কাপ্তানবাজার, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি এবং খিলগাঁও বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
এসব বাজারে আগের দামের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, মানভেদে ঝিঙা-ধন্দুল-পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, চিচিঙা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল আকারভেদে ৮০ টাকা, ঢেঁরস বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ধনিয়া পাতা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দামে।
তবে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে কয়েকটি সবজির দাম। দাম কমে কচুর ছড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শিম ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দামে। অপরিবর্তিত আছে লাউ, জালি কুমড়া ও কাঁচা কলার। এসব বাজারে প্রতি হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, প্রতি পিস জালি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
সব জায়গায় সবজির বাড়তি দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতারা জানান, সম্প্রতি বর্ষা মৌসুমের শেষ সময় এসে হঠাৎ বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে সবজির সংকট রয়েছে বাজারে। তাছাড়া বর্তমান সময়টা সবজির মৌসুম না হওয়া আরও একটি কারণ, এতে দাম বেড়েছে সব ধরনের সবজির।
এ ক্ষেত্রে বেশী দামে সবজি ক্রয়ে ভুক্তভোগী ক্রেতা সাধারনের বক্তব্য , বাজারে কোনো সবজির ঘাটতি নেই। তাহলে কে দাম বাড়াচ্ছে? অবশ্যই ব্যবসায়ী মহল। তারা সিন্ডিকেট করে সব কিছুর মূল্য নির্ধারণ করে দেন। আগের বাড়তি দাম রয়েছে ডাল, চিনি ও ভোজ্য তেলের বাজারে। বাজারে প্রতি কেজি ডাবলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২০ টাকা কেজি দামে।
বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়, চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দামে। আগের চড়া দাম রয়েছে চালের বাজারে। এসব বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, পায়জাম ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৫৮ টাকা, জিরা মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজির ৫৫ টাকা ও পোলাও চাল (খোলা) ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি।
বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, গরু মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দামে।
দাম বেড়েছে ছোট মাছের। কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি কেজি কাঁছকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, মলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি টেংরা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৬০০ টাকা, বাগদা ও গলদা ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজিতে।
অপরিবর্তিত আছে অন্য সব মাছের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ১০০ থেকে ১৬০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ মাছ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, সিলভার কার্প ১০০ টাকা, মিরর কাপ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দামে।
সান নিউজ/এসকে
