নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২০’। কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) যৌথ উদ্যোগে পালিত হবে দিবসটি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হোন, শরীরের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ’।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এ লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এবার আমরা পালন করতে যাচ্ছি বিশ্ব খাদ্য দিবস। এ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সেমিনার, কারিগরি সেশন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমসহ কৃষি মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবাইকে নিয়ে একসাথে বিকশিত হােন, শরীরের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ’ বিষয়ে শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় প্যান প্যাসিফিক সােনারগাঁও হােটেল একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়ােজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মহাপরিচালক কিউইউ ডঙ্গিইউ অনলাইনে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া দেশ-বিদেশের কৃষিবিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিজ্ঞানী, কৃষি অর্থনীতিবিদরা অংশগ্রহণ করবেন। সারাদেশের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা অফিসের প্রায় ৫০০ শতাধিক কর্মকর্তা অনলাইনে সংযুক্ত থাকবেন। এ সেমিনারে প্রাপ্ত সুপারিশ অনুযায়ী করােনাকালে ও করােনা পরবর্তী খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, শুধু খাদ্য উৎপাদন করলেই হবে না, খাদ্যের সরবরাহ ও প্রাপ্যতা এবং খাদ্যে সাধারণ মানুষের প্রবেশযােগ্যতাও নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। এ বিষয়গুলােতে বিশেষত পুষ্টিনিরাপত্তা ও খাদ্য অপচয়রােধে সবচেয়ে বেশি দরকার জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির চরম বিরূপ পরিস্থিতি এবং ঘূর্ণিঝড়, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝেও বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রেখেছে। এ অর্থবছর চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় তিন কোটি ৮৭ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে বিশ্বে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া বিশ্বের অনেক দেশ খাদ্য সংকটে পড়লেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সব দুর্যোগ মােকাবিলা করে দেশের খাদ্য উৎপাদনের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। আশাকরি, বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২০ সফল হবে। সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের বৃহত্তর জনগােষ্ঠীকে অবহিতকরণের জন্য মােবাইলে সচেতনতামূলক খুদেবার্তা পাঠানো, জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২০ প্রতিপাদ্য তাৎপর্য পােস্টার/বিলবাের্ড/ভিডিও/মেসেজ/ডকুমেন্টেশন প্রচার, ‘কৃষিকথা’ ম্যাগাজিনের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযথভাবে দিবসটি উদযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ব খাদ্য দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দুপুর আড়াইটায় প্যান প্যাসিফিক সােনারগাঁও হােটেলে একটি কারিগরি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, খাদ্য সচিব বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।