বৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবে চলমান অভিযানে প্রায় প্রতি মাসেই দলে দলে দেশে ফিরছেন প্রবাসীরা। গত মধ্যরাতে একসাথে দেশে ফিরেছেন ফিরেছেন ১৪৫ জন। সব মিলিয়ে গত দেড় মাসে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মীকে ফেরত পাঠালো সৌদি আরব।
সৌদি যাওয়ার মাত্র তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে দেশে ফিরতে হয়েছে অনেককে। এদের একজন শহীদুল ইসলাম। মাত্র তিন মাস আগে তিন লাখ টাকা খরচ করে গাড়ি চালানোর কাজে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। গত শনিবার রাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। আট মাস আগে গিয়েছিলেন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার একই গ্রামের দুই যুবক বিজয় মিয়া ও নাজির উদ্দিন। দেশে ফিরে আসা এই ১৪৫জন সবাই প্রায় এক বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সোনালী স্বপ্ন ভেঙে খানখান। গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তাঁরা দেশে ফিরে আসতে হয়েছে।
প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারিতে ৩ হাজার ৬৩৫ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৯৫৯ জন সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩শ’ জন রয়েছেন নারী কর্মী।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৫ হাজার ৭৮৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ১৫ হাজার ৩৮৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৬ হাজার ১১৭ জন, ওমান থেকে ৭ হাজার ৩৬৬ জন, মালদ্বীপ থেকে ২ হাজার ৫২৫ জন, কাতার থেকে ২ হাজার ১২ জন, বাহরাইন থেকে এক হাজার ৪৪৮ জন ও কুয়েত থেকে ৪৭৯ জন দেশে ফিরেছে। প্রতিবছরই দেশে ফিরছেন গড়ে অন্তত ৫০ হাজার শ্রমিক।
নিয়োগপত্র দেখিয়ে তিন মাসের ভিসা নিয়ে সৌদি যান এসব কর্মীরা। যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে ইকামা নিতে হয় তাঁদের। যাঁরা ইকামা নিতে ব্যর্থ হন, তাঁরা অবৈধ হয়ে যান। ৬ মাস বা এক বছরের জন্য ইকামা নিলেও পরে নবায়ন করতে যাঁরা ব্যর্থ হন, তাঁরাও অবৈধ হয়ে পড়েন। আবার কেউ কেউ পড়েন দালালদের খপ্পরে। দালালরা সৌদি নাগরিকের যোগসাজশে নকল নিয়োগপত্র বানিয়ে কর্মী পাঠায়। পরে দেখা যায়, সেই সৌদি নাগরিকের নিয়োগ দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। এসব কারণে ফিরতে হচ্ছে অধিকাংশ সৌদি প্রবাসীদের।