জেলা প্রতিনিধি: কৃষি নির্ভর গ্রামবাংলায় বর্তমানে কৃষক বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদ পদ্ধতি ও ডিজিটাল সুবিধায় কাজ করছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কের নারী বেলুন পাইলট ওজদেম
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের হলিধানী গ্রামের মোহাম্মদ হুজুর আলী পেশায় একজন আলমসাধু চালক। গাড়ি চালিয়ে সংসার চলে তার। সামান্য কিছু জমানো টাকা দিয়ে ৩০ শতক জমি বন্ধক নিয়ে চাষ করতে গিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতেন। কখনো সেচের অভাব, কখনো পোকামাকড়ের আক্রমণ, আবার কখনো ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তার আয় ছিল অপ্রতুল।
কৃষি অফিসের প্রণোদনা ও সহযোগিতায় টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করেছেন। যেখানে মাটির আর্দ্রতা ঠিক রাখতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা হয়েছে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ। যার ফলে সুতা ও বাঁশের মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলে আছে (স্মার্ট ২২১৭ এবং বাহুবলি) জাতের টমেটো। এভাবে টমেটো চাষে হুজুর আলীর শুধু খরচই কমেনি, ফসলের উৎপাদনও বেড়েছে কয়েকগুণ।
কৃষি অফিস বলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলাতে ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে ১৮০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের টমেটো চাষ করা হয়েছে। ৫ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করা হয়েছে যার মেধ্য ১০ জন কৃষককে স্মার্ট ২২১৭ এবং বাহুবলি জাতের টমেটোর প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। এই প্রদর্শনীর আওতায় হুজুর আলীকেও টমেটোর প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জয়নালের বাগানে ‘দার্জিলিং’ কমলা
কৃষক হুজুর আলী বলেন, পাশাপশি দুই জমিতে এবারই প্রথম টমেটো চাষ করেছি। একটা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে, অন্য জমিতে সাধারণভাবে চাষ করা হয়েছে। সাধারণ জমিতে একটা গাছ থেকে ২ থেকে আড়াই কেজি টমেটো পাওয়া যাবে। আর যে জমিতে কৃষি অফিসের প্রদর্শনী এবং সহযোগিতার মাধ্যমে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, সেই জমিতে একটা গাছ থেকে ৪-৫ কেজি টমেটো ফলন পাব। আমার এই চাষ অনেক ভালো হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নূর-এ-নবী বলেন, এ বছর রবি মৌসুমে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। এর ভেতরে ফুলকপি, শিম, টমেটো ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তবে এ বছর টমেটো আবাদে নতুন প্রযুক্তি লক্ষ্য করছি। যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় নতুন প্রযুক্তিও কৃষকের কাছে দিয়েছি। তার মাধ্যমে টমেটোর ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও বর্তমান সবজির বাজার একটু কম, এই বাজার আগামীতে বাড়বে এবং কৃষকরা লাভবান হবে। তবে হুজুর আলীর এই সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উদ্ভাবনী চাষাবাদ পদ্ধতি গ্রহণে আগ্রহী করে তুলবে।
সান নিউজ/এএন