‘নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীতের অঙ্গীকার’
জাতীয়

‘নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীতের অঙ্গীকার’

সান নিউজ ডেস্ক:

২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে অঙ্গীকার নবায়ন ও প্রচেষ্টা জোরদার করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম বার্ষিক অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘ফোর্থ ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ওমেন’-এর ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে বিশ্ব সরবরাহ চেইনসহ অন্যান্য বৃহৎ কর্মক্ষেত্রে অভিবাসী শ্রমিকসহ নারী কর্মীদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে যেন তারা আবারও প্রান্তিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

অন্য দুটি বিষয় তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই বলেন, প্রতিটি মেয়ের কাছ থেকে বিশ্ব উপকৃত হতে পারে যার সম্ভাবনা ইতোমধ্যে উপলদ্ধি করা গেছে, প্রতিটি নারী যাদের মেধা অবিকশিত এবং কেবল শিক্ষার মাধ্যমেই এর বিকাশ ঘটানো সম্ভব।

দ্বিতীয়ত তিনি বলেন, আয় এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমেই ক্ষমতায়ন সৃষ্টি হয়। তাই আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফোর্থ ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন উইমেন এর ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে তিনি আনন্দিত। তিনি বলেন, ২৫তম এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি ২০৪১ সাল নাগাদ কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০-৫০ এ উন্নীত করার অঙ্গীকার করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশেষ করে নারীদের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, মহামারির এই সময়ে নারীরা বৈষম্য এবং বেড়ে যাওয়া পারিবারিক সহিংতার শিকার হচ্ছে। এ কারণে নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের কষ্টার্জিত অর্জন হুমকির মুখে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে ১৯৯৫ সালের বেইজিং ডিক্লারেশন এন্ড প্লাটফর্ম ফর অ্যাকশন একটি বড় ধরণের রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এটি নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপকভাবে বদলে দিয়েছে এবং ইতিবাচক উন্নয়নের অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তখন থেকে প্রায় সকল দেশে নারী ও মেয়েদের সুরক্ষায় আইনী কাঠামো গঠন করে। ২০৩০ এজেন্ডাও সকল লক্ষে নারী ক্ষমতায়নকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেহেতু ডিকেড অব অ্যাকশনে প্রবেশ করেছি, তাই আমাদেরকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতি নবায়ন করতে হবে এবং নারী-পুরুষের সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে।’ জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ে নারী প্রতিনিধিদের অগ্রাধিকার দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সকল পর্যায়েই এমনটা দেখতে চাই।’

নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে নারীদের বসিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দেশে নারী-পুরুষ সমঅধিকার ভিত্তিক একটি সংবিধান নিশ্চিত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নারীদের বাস্তব সম্মত প্রয়োজন পূরণের উপর জোর দেয়া হয়েছে। আমাদের এই উন্নয়নে সমাজের সকল স্তরের সব ধরনের মানুষকে অন্তর্ভূক্তির ওপর জোর দেয়া হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ জন্যই আমরা শিক্ষার পাশাপাশি নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উপর জোর দিয়েছি। আমরা নারীদের আমাদের উন্নয়নের সক্রিয় কর্মী হিসেবে বিবেচনা করি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার ২০১১ সালে একটি প্রগতিশীল নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০টিতে উন্নীত করা হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সংসদ নেতা, সংসদীয় উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও স্পিকার নারী।

শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ৩০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। আর জনসেবাতে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, নারীরা এখন উচ্চ আদালতের বিচারক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আরও অনেক কিছু হয়ে উঠছেন। জেন্ডার বাজেটিং, মাইক্রো ফাইনান্স এবং অনুরূপ উদ্যোগগুলো মহিলাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীদের ক্ষেত্রে সরকারের বিনিয়োগ নারী সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুফল বয়ে আনছে। তিনি বলেন, আজ ২ কোটি নারী কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে নিয়োজিত রয়েছেন এবং ৩৫ লাখেরও বেশি নারী তৈরি পোষাক খাতে কাজ করছেন, যা আমাদের বৃহত্তম রফতানি আয়ের ক্ষেত্র।

শেখ হাসিনা বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার নারী সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নারীরা বাঁধা ভাঙছে এবং পেশায় সফল হচ্ছেন যা আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম কখনই কল্পনা করতে পারতো না’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী অনেক প্রশংসা অর্জন করেছে।

তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুসারে, আমরা নারীদের সামগ্রিক ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছি। ১৪৯ টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম স্থানে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ণে ৭ম স্থানে রয়েছে। আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে।’ সূত্র: বাসস

সান নিউজ/আরএইচ | Sun News

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ওটিটিতে আসছেন করণ জোহর

বিনোদন ডেস্ক: বলিউডের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক করণ জোহর এ...

উলিপুরে অনিয়মের দায়ে পদ হারালেন ইউপি চেয়ারম্যান

কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্র...

ইলিশ উপহার হিসেবে যাচ্ছেনা

নোয়াখালী প্রতিনিধি : ভারতে ইলিশ উপহার হিসেবে যাচ্ছেনা বলে জা...

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি মেহেদী গ্রেফতার 

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্ট...

ইরানে বিস্ফোরণে নিহত ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানে একটি কয়লাখনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘট...

গাজীপুরে কলোনিতে আগুন

জেলা প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকের আমবাগান...

আমরা প্রতিশোধের বিচার করতে চাই না

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ ন...

দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইস...

সবাইকে সম্পদের হিসাব দি‌তে হ‌বে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সচিবালয়ে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নব...

মুরুব্বিকান্ডে সেই বৃদ্ধা গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম আনোয়ারায় ‘মুরুব্বি, মুরুব্বি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা