প্রীতিলতা স্বদেশ:
ঘটা করে গেল ২২শে জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন করা হলেও তার সুফল পেতে আরও অন্তত মাস ছয়েক অপেক্ষা করতে হবে সাধারণ মানুষকে। এই মুহুর্তে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সেবা দিতে গিয়েই অনেকটা হিমশিম অবস্থা অধিদপ্তরের। ২২শে জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫০ সাধারণ মানুষ ই-পাসপোর্ট পেয়েছেন। অথচ আবেদন পড়েছে ১৬ হাজারের বেশি। এই তথ্য গেল ৬ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেছেন, জনবল সংকট আর প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতাই এর কারণ। প্রশ্ন ওঠেছে, জনবল সংকট আর প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা নিয়ে তাহলে কেন এই তড়িঘড়ি সেবা চালু করা হলো। প্রশ্ন যেটিই হোক, প্রকল্প পরিচালকের বক্তব্য অনুযায়ী সেই ‘সীমাবদ্ধতার’ কারণে মহা সংকটে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। যারা আবেদন করেছেন তাদের ই-পাসপোর্ট কবে মিলবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, যদিও প্রতিদিনই জমা পড়ছে নতুন নতুন আবেদন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে খুব প্রয়োজন যাদের তারাই পাসপোর্ট করেন। স্বাভাবিকভাবে পাসপোর্ট করে রাখার প্রবণতা কম। তাই জরুরি প্রয়োজনে যারা যাচ্ছেন সেবা নিতে তাদের হতে হচ্ছে হতাশ এবং বিড়ম্বনার শিকার। সাইদুর রহমান খানের দাবি, নতুন প্রক্রিয়ায় একটু-আধটু সমস্যা থাকে। অবশ্য তিনি আশা দেখিয়েছেন শিগগিরই এই সমস্যা কেটে যাবে।
কিন্ত সেই ‘শিগগিরটা’ কতোদিনে আসবে তা কেউ বলতে পারছেন না। আবার এরইমধ্যে যাদের এমআরপির মেয়াদ ছয়মাসের কম তারা এমআরপিও পাচ্ছেন না। অপেক্ষা করা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই তাদের। কতৃৃফক্ষু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন- অপেক্ষা করতে হবে। জানানো হয়েছে আগামি ছয় মাসের মধ্যে সারা দেশে উল্লেখযোগ্যহারে ই-পাসপোর্ট সেবা দেয়া যাবে।
অপরদিকে বিমানবন্দরে যে ই-গেটগুলো স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ পাবেন তারাই যে সব দেশে যেতে ভিসা লাগেনা। অন্যদের সেই লাইনেই দাঁড়াতে হবে ম্যানুয়াল ইমিগ্রেশনের জন্য! ফলে ই-পাসপোর্টের সেবা খুব একটা সুফল এখনই মিলছেনা।
বিশ্বের সর্বমোট ২৩০ অথবা স্বাধীন ১৯৪ দেশের মধ্যে ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই যুগে প্রবেশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেবা উদ্বোধন করে বলেছেন, বিশ্বে এখন আর বাংলাদেশিদের হয়রানির শিকার হতে হবেনা। বিশেষ করে নিরাপত্তা বেশ জোরদার এই ব্যবস্থায়। তবে তাড়াহুড়ো করে প্রকল্পটি উদ্বোধন করায় সুফল পাওয়ার বদলে বিড়ম্বনার কারণে ক্ষোভ জন্ম নিচ্ছে সাধারন মানুষের মাঝে।
এদিকে গত সোমবার জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল বলেছেন, ক্রমান্বয়ে ১৮ মাসের মধ্যে সব বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসসমূহে ই-পাসপোর্ট চালু করা হবে। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং ই-পাসপোর্ট যুগপৎভাবে চলমান থাকবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঢাকার তিনটি অফিস; ঢাকাস্থ বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, উত্তরার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং যাত্রাবাড়ীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট চালু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।।